কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: বীরভূমের বগটুইয়ে হত্যালীলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চাপানউতোরের মধ্যেই ফের এই ঘটনা নিয়ে সরব হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁর বক্তব্য, ‘সাম্প্রতিককালে এমন গণহত্যা ঘটেনি। হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা দেখে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মহিলা-শিশুরা জীবন্ত দগ্ধ, গণতন্ত্রে এর থেকে ভয়াবহ কিছু হতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে বলেছিলেন, রাজভবন থেকে পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে। রামপুরহাটে যা হয়েছে, তা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।’


কড়া চিঠি রাজ্যপালের


এর আগে বগটুইকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির উত্তরে কড়া চিঠি দেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটবে আর আমি রাজভবনে চুপ করে থাকব, তা হয় না। আপনি বলেছেন বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া রাজ্য সব সময় শান্তিপূর্ণ, এই দাবি হাস্যকর। ষড়যন্ত্রের কথা বলে আপনি অপরাধীদের আড়াল করতে চাইছেন। তদন্তে অপরাধীদের খুঁজে বার করা নিয়ে আপনার আশ্বাস বাস্তববর্জিত। রাজনীতির খাঁচায় বন্দি তদন্তের ওপর কোনও আস্থা নেই।’


রাজ্যপালকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর


আজ একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে বসে আছেন একজন লাটসাহেব। কথায় কথায় বলছে-সবচেয়ে খারাপ বাংলা। রোজ ঘুরে বেড়াচ্ছেন দার্জিলিং-জলপাইগুড়ি, আর প্রতিদিন সরকারকে গালি দিচ্ছেন। একটা পুলিশ যদি একটু দোষ করে থাকে, তার অ্যাকশন হচ্ছে। সবাই খারাপ? আপনি রাস্তা দিয়ে যাবেন, তারা পাহারা দেয়। সারারাত আপনি ঘুমোবেন, তারা পাহারা দেয়। সারারাত ট্রাক চলবে, দুর্গাপুজা, ইদ, রমজান, বড়দিন হবে, দোল-কালীপুজো, বিয়ে, খেলাধূলা সব প্রোগ্রামে তারাও তো আমাদের সাথী হয়। আমি কি বলতে পারি, আমার পাঁচটা আঙুল সমান? যদি কেউ অন্যায় করে, প্রয়োজনীয় শাস্তি দিই, এটা আমাদের কর্তব্য। আসলে দাঙ্গা করতে পারছে না, খেতে পারছে না, মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না, এগুলি বলতে পারছে না। তাই ধরে নিয়েছে। খুব সহজে একটা দেশলাই জ্বালিয়ে দেওয়া তাই না? এই দেশলাই জ্বালাতে, আমি জানি যারা চক্রান্ত করে তাদের জুড়ি নেই। কিন্তু তারা বোঝে না, অন্যের ঘরে দেশলাই লাগালে, সেটা উড়ে এসে কখনও নিজের ঘরেও পড়তে পারে। অনেক নষ্টামি, দুষ্টামি, অপপ্রচার চলেছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়, মানুষ কোথায় নিরাপদ থাকবে!’