বীরভূম : কালীপুজোর (Kali Puja 2022 ) আগেরদিন থেকেই জমজমাট বীরভূমের তারাপীঠ মন্দির চত্বর। ভিড় জমাতে শুরু করেন ভক্তরা। আলোয় সেজে উঠেছে তারামা-র মন্দির। তারাপীঠে ( Tarapith ) সোমবার অমাবস্যায় শক্তির আরাধনা ৷ রীতি মেনে হবে পুজো ৷ আলোর মালায় সেজে উঠেছে গোটা মন্দির ৷
সিদ্ধ পীঠ কেন ?
তারাপীঠ কিন্তু সতীপীঠ ( Satipith ) নয়। শক্তিপীঠ। কথিত আছে, একবার দেবীর মাতৃরূপ দর্শন চান বশিষ্ঠ মুনি ৷ দেবীও নিরাশ করেননি ৷ মাতৃরূপে দর্শন দেন দেবী। এখানেই তপস্যা করে সিদ্ধিলাভ করেন তারা মায়ের ভক্ত বামাক্ষ্যাপা। ফলে এটি সিদ্ধ পীঠ হিসেবেও পরিচিত।
পুণ্যার্থীদের ভিড়ে সরগরম মন্দির চত্বর। সকালে স্নানের পর দেবীর শিলাব্রহ্মময়ী মূর্তিকে রাজবেশে সাজিয়ে তোলা হয়। এদিন চুনরি পরানো হল মাকে। এরপর পঞ্চ উপাচারে মঙ্গলারতি এবং নিত্যপুজো৷ মাকে দেওয়া হয় শীতল ভোগ। নিবেদন করা হয় মিষ্টি, ফল ও মিছরি ভেজানো জল।
পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগে কী কী
কালীপুজোর দিন তারা মাকে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে ভোগ নিবেদন করা হয় ৷ ভোগ হিসেবে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, পাঁচ মিশালি তরকারি, মাছ, চাটনি, পায়েস এবং মিষ্টি। এখানকার অন্নভোগের বিশেষত্ব পোড়া শোলমাছ মাখা। দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষ্যে নিয়ম-নিষ্ঠা মেনে হয় বিশেষ সন্ধ্যারতি৷ এরপর নিবেদন করা হয় লুচি, পায়েস, সুজি দিয়ে শীতল ভোগ।
তারাপীঠ মাহাত্ম্য
তারাপীঠের আধ্যাত্মিক তাৎপর্যর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত তারাপীঠ মহাশ্মশান। দ্বারকার ধারে যেখানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বামাক্ষ্যাপা। নানা সময় নানা কাহিনি আবর্তিত হয়েছে এই মহাশ্মশানকে ঘিরে। এখানেই রয়েছে তারামায়ের পাদপদ্ম। কথিত আছে, মহাশ্মশানের একটি শ্বেত শিমূল গাছের নীচেই আবিষ্কৃত হয় মা তারার শিলামূর্তি। তারাপীঠ মন্দির ও তার তীর্থমাহাত্ম্য নিয়ে গড়ে উঠেছে একাধিক কিংবদন্তী। কথিত আছে, মহাঋষি বশিষ্ঠের দীর্ঘ তপস্যার পর, যে রূপে মা তারা তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন, দেবীর সেই রূপই প্রস্তরীভূত হয়। তারাপীঠে যুগের পর যুগ ধরে সেই রূপেই পূজিত হয়ে আসছেন মা তারা।
তারাপীঠ বাংলার তন্ত্রচর্চার একটি বড় অধ্যায়, তেমনই তিনি কেন্দ্রবিন্দু হয়ে রয়েছেন অসংখ্য কিংবদন্তীর।