বীরভূম: ছাত্র-বিক্ষোভের মধ্যে হঠাৎ অসুস্থ বিশ্বভারতীর উপাচার্য। বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে ফিরতে হয় চিকিৎসকদের। গতকালেই অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এ দিকে, বিশ্বভারতীর ছাত্র আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকদের একাংশ। উপাচার্যের অভিযোগ, তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। শিশুদের দুধ পর্যন্ত আনতে দেওয়া হচ্ছে না।


বিশ্বভারতীতে অব্যাহত অচলাবস্থা। শুক্রবার, এনিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি। ৩ পড়ুয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে, উপাচার্যের বাড়ির সামনে মঞ্চ বেঁধে অবস্থানে বসেছে ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তাঁকে দেখতে আসেন দুই চিকিৎসক। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভে আটকে যায় অ্যাম্বুল্যান্স।চিকিৎসদের সঙ্গে তাঁদের দুই প্রতিনিধিকে ঢুকতে দিতে হবে বলে দাবি করেন পড়ুয়ারা। কিন্তু, নিরাপত্তারক্ষীরা সেই দাবি না মানায়, বিক্ষোভের মাঝে আটকে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। 


শেষপর্যন্ত ফিরতে হয় চিকিৎসকদের। পরে চিকিৎসকদের নিয়ে উপাচার্যের বাড়িতে যায় পুলিশ। কিন্তু, অসুস্থ উপাচার্য ঘুমিয়ে পড়ায় ফিরে আসেন চিকিৎসকদের। এদিকে বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর ছাত্র আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকদের একাংশ।


অন্যদিকে, উপাচার্যকে সরানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন। উপাচার্যর অভিযোগ,
তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। কর্মীদেরও হেনস্থা করা হচ্ছে, কটূক্তি করা হচ্ছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খাবার। বিশ্বভারতী দুর্নীতি এবং অনৈতিক কার্যকলাপের আখড়া হয়ে উঠেছে। যেটা বর্তমানে চুড়ান্ত জায়গায় পৌঁছেছে। তাই এই হিংসাত্মক আচরণ। 


এ নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা। একদিকে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীর ঘটনায় লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি ছাত্রদের সাথে আলাপ আলোচোনা করে সমস্যা সমাধান করুক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত স্থানে তাড়াতাড়ি শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা ফিরে আসুক।


অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, বলছেন বিশ্বভারতীকে নিয়ে গর্ব করেন। তাহলে সেখানে গুন্ডা পাঠাচ্ছেন কেন? বিশ্বভারতীর দেওয়াল কারা ভাঙতে গেছিল? ওনার নেতারা গেছিল। প্রমোটার ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। এটা কি কবিগুরকে সম্মান করার উদাহরণ। 


অচলাবস্থা কাটাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে, আদালতের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য নিরাপত্তা চাওয়ার পর, ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।