বহরমপুর : রাজ্যে একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) অভিযোগে জেরবার রাজ্যের শাসকদল। এবার পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে বিজেপির নিশানায় মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ (TMC MP)। 'কলকাতা পুরসভায় নিয়োগের জন্য ৬ জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন আবু তাহের খান।' ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি দিয়ে ৬ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ বিজেপির। বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতির প্রশ্ন, 'কেন ৬ জনের নাম সুপারিশ করা হয়েছিল ? বাকি পরীক্ষার্থীরা কি যোগ্য নন ? এই ৬ জনের কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছে ?'
যদিও এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে দাবি করেছেন মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ। পাল্টা তাঁর বক্তব্য, 'আমাকে হেয় করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটা করছে বিজেপি।' বিজেপিকে পাল্টা মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খানের।
মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, "ডবল জনপ্রতিনিধি অর্থাৎকলকাতার বর্তমান মেয়র ববি হাকিমকে চিঠি দিচ্ছেন আমার এই জেলার বড় জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ আবু তাহের সাহেব। আবু তাহের সাহেব ছয় জনকে চাকরি দেওয়ার জন্য তাঁকে অনুরোধ করছেন। তাঁদের রোল নম্বর, নাম-সহ বিস্তারিত পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করছেন, কলকাতা কর্পোরেশনের জন্য। তাহলে বাকি যাঁরা ওই সময়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন, যাঁদের রোল নম্বর ছিল তাঁরা কি চাকরি পাওয়ার যোগ্য নন ? এই মহান আত্মত্যাগী নেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন। দরদি নেতাদের কাছে জানতে চাই, এই ছয় জন নেতার কাছে কত টাকা নেওয়া হয়েছে ? এরকম আর কত চিঠি পাওয়া যাবে ?"
যদিও অভিযোগ উড়িয়ে আবু তাহের খান বলেন, "যে প্যাডে এটা করা হচ্ছে, সেটা আমার সই-ও নয়। একটা প্যাড ছাপিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য করছে। একদিকে সিবিআই, একদিকে ইডি, আর একদিকে বিজেপি নেতারা, আর একদিকে শুভেন্দু। এই খেলাতেই মেতেছে সব চরিত্র হননের। "
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে সিবিআই অভিযান ঘিরে একের পর এক চমক। এবার বিধায়কের ফেলে দেওয়া দ্বিতীয় মোবাইল ফোনের খোঁজে পুকুরে নামানো হয়েছে জেসিবি। জলশূন্য পুকুরের মাটি কেটে মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাটি কেটে রাখা হচ্ছে ট্রাক্টরে। তারপর মাটি ঘেঁটে দেখা হচ্ছে মোবাইল রয়েছে কিনা।
রবিবার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নিয়ে মোবাইল ফোন ছুড়ে ফেলার পুনর্নির্মাণ করাতেই মেলে সাফল্য। সিবিআই সূত্রে খবর, সকাল ৭টা ২৫-এ বিধায়ককে তাঁর বাড়ির ছাদে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মান করা হয়। সিবিআই আধিকারিকদের নির্দেশে ছাদের পাঁচিলে উঠে বাড়ির পুকুরে ঢিল ছোড়েন তৃণমূল বিধায়ক। ঠিক যেভাবে তিনি নিজের দুটি মোবাইল ফোন ছুড়ে পুকুরে ফেলে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিধায়কের ছোড়া ঢিল পুকুরের যে জায়গায় পড়েছিল, সকাল ৭টা ২৭ মিনিটে সেখানেই নামানো হয় ৪ পাম্প কর্মীকে। ঠিক ১১ মিনিট পর ৭টা ৩৮ মিনিটে পুকুরের পাঁক থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়। যদিও এখনও দ্বিতীয় ফোনটি মেলেনি। তদন্তকারীদের অনুমান, এই মোবাইল ফোনেই রয়েছে নিয়োগ দুর্নীতির তথ্য।
আরও পড়ুন ; CBI অভিযান চলাকালীন বিধায়ক জীবনকৃ্ষ্ণর বাড়ির সামনে হাজির তৃণমূল নেতারা