শান্তিনিকেতন : ‘বীরভূমে, শান্তিনিকেতনে পার্থর বেশ কিছু জমি-জায়গা বাড়ি আছে, সেরকম আভাস আগেই ছিল, এবার এই জমি-জায়গা-বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনতে সাহায্য করার মূল ব্যক্তি আমন্ত্রণ পাবেন, মূল ব্যক্তি সম্ভবত খুব তাড়াতাড়িই আমন্ত্রণ পাবেন’। ট্যুইট করে কটাক্ষ বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার।
দিনকয়েক আগেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়াকে নিশানা করেছিলেন তিনি। বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা ট্যুইট করেন, পার্থ ডাকাত। ডাকাতটার PhD গাইড অধ্যাপক অনিল ভুঁইমালি (ভাইস চ্যান্সেলর, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়) এবং কো-গাইড অধ্যাপক বিপুল মালাকার (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়)! যেখানে PhD-র কোর্স ওয়ার্কে ৭৫ শতাংশ হাজিরা বাধ্যতামূলক, সেখানে মাত্র ২ দিন হাজিরা দিয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি ছিনিয়ে নিয়েছেন রোম্যান্টিক চোর পার্থ! পার্থর PhD গাইড ও কো-গাইডকে অবিলম্বে বরখাস্ত করা দরকার। ট্যুইটে লিখেছিলেন, অনুপম হাজরা। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের PhD গাইড অধ্যাপক অনিল ভুঁইমালি। এবার অনুপমের নিশানায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সম্পত্তি, বাড়ি।
অপা অর্পিতারই
চর্চার কেন্দ্রে থাকা শান্তিনিকেতনের 'অপা' আসলে অর্পিতারই। এবিপি আনন্দর হাতে এসেছে শান্তিনিকেতনের ‘অপা’-র দলিল। যেখানে নথিতে উল্লেখ, ২০১২ সালে কলকাতার বাসিন্দা শ্যামলী বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকায় ২টি বাড়ি-সমেত ১০ কাঠার একটু বেশি এই জমিটি কেনা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) নামে।
শান্তিনিকেতনের শ্যামবাটি মৌজায় জমির দাগ ও খতিয়ান নম্বর দেখে বোলপুর ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের (Land And Land Reforms) আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০২০ সালে শুধুমাত্র অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে ওই জমির মিউটেশন করানো হয়। এখনও সেই নামেই রয়েছে অপা নামে ওই বাড়ির মালিকানা। সেখানকার বিএলআরও স্বীকার করেছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামেই অপা-র মালিকানা থাকার কথা।
অর্পিতার আরও সম্পত্তির হদিশ
এদিকে, দু’-দুটি রিয়েল এস্টেট সংস্থার পর এবার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) নামে টেক্সটাইল সংস্থার (Textile Company) হদিশ। তিনটি কোম্পানিরই ঠিকানা এক। বেলঘরিয়ার রথতলায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের যে ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ২৮ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, ক্লাবটাউন হাইটসের সেই 8A ফ্ল্যাটের ঠিকানাতেই চলছিল তিন-তিনটি কোম্পানি। তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল ইডি-র তদন্তকারীদের হাতে।
ইডি (Enforcement Directorate) সূত্রে খবর, একই ঠিকানায় দুটি রিয়েল এস্টেট সংস্থা ও একটি টেক্সটাইল সংস্থার কর্পোরেট মন্ত্রকে নথিভুক্তিকরণ হয় ২০১২ সালে। ৩টি সংস্থারই বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছিল একই দিনে, ২০২১-এর ৩০ নভেম্বর। ব্যালান্স শিটও একইদিনে ২০২১-এর ৩১ মার্চ ফাইল করা হয়। ইডি সূত্রে খবর, টেক্সটাইল কোম্পানির শেয়ার ক্যাপিটাল ছিল ২ লক্ষ টাকা, অন্যদিকে, একই ঠিকানায় চলা দুটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির (Real Estate Company) শেয়ার ক্যাপিটাল ছিল একলক্ষ টাকা করে।