কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : এবার কি তৃণমূলের পথে রাজ্য বিজেপির (BJP) প্রাক্তন সহ সভাপতি চন্দ্র বসু? নেতাজির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি একমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। আর আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সম্পর্কে প্রশংসা, অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে বিজেপির সমালোচনা করায় চন্দ্র বসুকে নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছে। তৃণমূলে (TMC) যোগদানের প্রশ্নেও অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিজেপিতে ভাঙন !
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) আগে বঙ্গ বিজেপিতে ভাঙনের জল্পনার মধ্যেই নেতাজির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গেছে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ সভাপতি চন্দ্র বসুকে (Chandra Basu)। নেতাজির পরিবারের আরেক সদস্য, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ সুগত বসুও (Sugata Basu) উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। আর তার জেরেই রাজ্য-রাজনীতিতে দানা বেধেছে নতুন জল্পনা।
তাহলে কি পদ্ম শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে এবার তৃণমূলের পথে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ সভাপতি? রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ সভাপতি চন্দ্র বসু বলেছেন, 'বিজেপিতে কাজ করার সুযোগ পাইনি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমি দুবার ভোটে দাঁড়িয়েছি। তবু বলছি, তৃণমূল প্রচুর কাজ করেছে রাজ্যে। বিজেপি তো তৃণমূলের বি টিম হয়ে আছে। অনেকে আমাকে বলছেন, বি টিমে আছেন কেন? এ টিমে কাজ করার তো সুযোগ অনেক বেশি! তাই সুযোগ পেলে এ টিমে যাওয়ার কথা সিরিয়াসলি কনসিডার করব'।
মমতার প্রশংসা
নিয়োগ দুর্নীতি (Teacher Recruitment Scam) থেকে আবাস যোজনায় (Awas Yojana) অনিয়ম - একের পর এক ইস্যুতে রাজ্য বিজেপির নেতারা যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকারের কড়া সমালোচনা করছেন, তখন চন্দ্র বসুর গলায় মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে প্রশংসার সুর। তিনি বলেছেন, '২০১৬ সালে আমি বিজেপিতে যোগ দিই। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, সব সমাজ, সব ধর্মকে একসঙ্গে না নিয়ে চললে উন্নতি সম্ভব নয়। মেরুকরণ করে রাজনীতি করতে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখিনি। কিন্তু, বিজেপি ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে'।
রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি থাকাকালীনই দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন চন্দ্র বসু। CAA-NRC নিয়েও মোদি সরকার ও বিজেপির ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন তিনি। ২ বছর আগে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যরা কেন আমন্ত্রিত নন,সেই প্রশ্ন তুলে সরাসরি নরেন্দ্র মোদির কাছে জবাব চেয়েছিলেন চন্দ্র বসু। এবার অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সহ সভাপতির সুর মিলে যাচ্ছে বিরোধী স্বরের সঙ্গে। চন্দ্র বসুর কথায়, 'ভারতবর্ষে আজ যা চলছে, অসহিষ্ণুতা, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। বাংলার রাজনীতি আলাদা। বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণ করা উচিত নয়। সেই বার্তা আমি কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিজেপি নেতাদের দিয়েছিলাম। তারা শুনলেন না। ২০২১ এ যা হওয়ার তাই হয়েছে।' এবার শেষপর্যন্ত কী হয়, সেদিকেই সকলের নজর।