কলকাতা: ফের বিস্ফোরক বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumdar) নিশানা অনুপমের। তাঁর কটাক্ষ,'বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে বলব নিজের কেন্দ্রে মন দিন, নিজের ওয়ার্ডে ২০ জন লোক নিয়ে ঘোরেন, তার মধ্যে ১৮ জন নিরাপত্তারক্ষী।' দলে সিন্ডিকেট চলছে বলে অভিযোগ তুলে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করলেন অনুপম হাজরা। তিনি বলেন, 'অমিত শাহ বাংলায় ৩৫ আসন জয়ের লক্ষমাত্রা ঠিক করে দিয়েছেন। যে ভাবে দলে সিন্ডিকেট চলছে তাতে ৩৫ আসন স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। প্রত্যেক জেলায় স্তাবকদের বসিয়ে রাখা হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন রয়েছে।' ঘর শত্রু বিভীষণকে নিয়ে লড়াই হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনুপম হাজরা।


একদিকে যখন অনুপমকে নিয়ে বঙ্গ বিজেপিতে (BJP) তোলপাড় চলছে। তার মধ্যেই ভাঙা হল অনুপম হাজরার অস্থায়ী মঞ্চ। অভিযোগের তির বিজেপি সমর্থকের একাংশের দিকে। বীরভূমের খয়রাশোলে কেন্দ্রীয় সম্পাদকের মঞ্চ ভেঙে দিলেন বিজেপি কর্মীরাই। অনুপম হাজরা পৌঁছোনোর আগে ভেঙে দেওয়া হল অস্থায়ী মঞ্চ। আর এই ঘটনায় বিজেপির জেলা সভাপতির বিরুদ্ধেই চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন অনুপম হাজরা। সভা বাতিল, আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ খোদ দলেরই কেন্দ্রীয় সম্পাদকের।


লোকসভা ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে চূড়ান্ত ডামাডোল। দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে নিশানা করার পর, বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদকের নিশানায় এবার সরাসরি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ২৪ ঘণ্টা আগেই, বোলপুরে একেবারে তৃণমূলের মঞ্চের কাছে চলে আসতে দেখা গিয়েছিল অনুপম হাজরাকে। আর তারপর একে একে নিশানা করলেন দলেরই রাজ্য নেতৃত্বের দুই পদাধিকারীকে। আর এ দেখেই অনেকের প্রশ্ন,তাহলে কি বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যেতে পারেন অনুপম হাজরা? জল্পনা আরও বাড়ল সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্যে। তিনি বলেন, 'কেন্দ্র সবকিছু জানে। আগামী বেশকিছু দিনের মধ্য়ে আপনারা এর ফল দেখতে পারবেন।'


বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা বলেন, 'আপনি নিজের ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ান ২০টা লোক নিয়ে। তার মধ্যে ১৮টা আপনার সিকিউরিটি। এই হচ্ছে আপনার অবস্থা।' তারই উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, '১৮টা সিকিউরিটি সুকান্ত মজুমদারের নেই। উনি জানেন না, যখন শুধু আমি সাংসদের দায়িত্ব পালন করতাম, তখন বালুরঘাটে স্কুটিতে ঘুরে বেড়াতাম। উইথআউট সিকিউরিটিতে ঘুরতাম। কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না।'


আর দলেরই রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতার যখন ঝামেলা হচ্ছে, সেদিনই খয়রাশোলে বিজয়া সম্মেলনীতে অস্থায়ী বিজেপির মঞ্চ ভেঙে দিল দলেরই একাংশ। খয়রাশোলে অনুপম হাজরা ও বিক্ষুব্ধ নেতা সায়ন্তন বসু পৌঁছনোর পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে যায়।  বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার গাড়ি ঘিরে শুরু হয় স্লোগান। অনুপম হাজরার গাড়ি বেড়িয়ে যেতেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বীরভূমের জেলা সবাপতি ধ্রুব সাহার অনুগামী এবং বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে একটি মিটিং করেই ফিরে আসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক।


এই পরিস্থিতিতেই নরম সুর শোনা গিয়েছে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলায়। তিনি বলেন, 'উনি দলের কেন্দ্রীয় নেতা, উনি নিশ্চয় অনেক কিছু জানেন....রাজ্য় নেতৃত্বের কথা বলে সলিউশন করা উচিত।'


আরও পড়ুন: শ্রমিকদের ই-শ্রম কার্ড করে দেওয়ার নামে বিভিন্ন নথি সংগ্রহের অভিযোগ, ছাতনায় গ্রেফতার ১০