গৌতম মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার: দলীয় কার্যালয়ের ভিতর থেকে বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার। এই ঘটনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তিতে চাঞ্চল্য ছড়াল। নিহত পৃথ্বীরাজ নস্কর মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ছিলেন। গত নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই বিজেপি নেতা। গত ৭ তারিখ পরিবারের লোকজন নিখোঁজ বলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। খোঁজ করতে গিয়ে শুক্রবার রাতে বিজেপি-র কার্যালয়ের ভিতর থেকে, তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয় রক্তাক্ত দেহটি। (BJP Leader Found Dead)


আপাতত ওই বিজেপি নেতার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ডামন্ড হারবার হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে দেহটি। আজ ময়নাতদন্ত হবে।
নিহত পৃথ্বীরাজ নস্কর মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁর এমন পরিণতি কী করে হল, প্রশ্ন উঠছে। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উস্তি এলাকায়। উত্তর খুঁজছেন পরিবারের লোকজন। (South 24 Parganas News)


পরিবার সূত্রে খবর, ৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন পৃথ্বীরাজ। বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। ফোন করলেও পাওয়া যায়নি। এর পর ৭ নভেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পরিবারের লোকজন। এর পর বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে, দলের কার্যালয়কে ঘিরে সন্দেহ বাড়ে পরিবারের লোকজনের। সেই মতো পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। তালা ভেঙে ওই বিজেপি নেতার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, এখনও পৃথ্বীরাজের নম্বরটি কখনও অন হচ্ছে, কখনও আবার অফ হচ্ছে।


জানা গিয়েছে, তালা ভেঙে বিজেপি-র ওই কার্যালয়ে ঢোকা হয়। সেখানে রক্তাক্ত দেহটি পড়ে ছিল। বিবস্ত্র অবস্থায় পড়েছিল দেহটি। জামাকাপড় পড়ে ছিল দেহের পাশেই। দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও জানা গিয়েছে। শনিবার তাঁর ময়নাতদন্ত হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে পৃথ্বীরাজের মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। শেষবার তিনি কার সঙ্গে কথা বলেন, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।


ওই কার্যালয়কে ঘিরেও একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। গত চার দিন ধরে তালাবন্ধ ছিল কার্যালয়টি। সেখানে দেহ থাকতে পারে বলেই বা কেন মনে হল পরিবারের, উঠছে প্রশ্ন। আজ বেলার দিকে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপি-র সক্রিয় কর্মী ছিলেন পৃথ্বীরাজ। দীর্ঘ দিন ধরে দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যে কার্যালয় থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটি নিয়মিত খোলা হয় না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।


পৃথ্বীরাজের দাদা বলেন, "আমি সবসময় বাড়িতে থাকি না। ১২টার সময় স্ত্রী ফোন করে বলল, ভাই খুন হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আসতে পারিনি। সকালে এসে শুনলাম নিয়ে গিয়েছে। সাময়িক ভাবে ব্যবহার করা হতো কার্যালয়টি। বিজেপি-র আইটি সেলের কর্মী ছিল ভাই। ঠিক ভাবে বলতে পারছি না। কিন্তু আমাদের একটা দুর্গাপুজো হয়। সেখানে জাস্টিস ফর আর জি কর লেখা ব্যানার টাঙানো হয়। বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যান সমাজবিরোধীরা।" কার্যালয়ের চাবি পৃথ্বীরাজের কাছে ছিল। সেই সূত্রেই কার্যালয়ে দেহ থাকতে পারেন বলে মনে হয় বলে জানিয়েছেন পৃথ্বীরাজের দাদা। বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল যেহেতু, তাই ভাইকে খুন করা হয়েছে বলেই মনে করছেন তিনি।