পশ্চিম বর্ধমান: আসানসোলে কম্বল বিলিকাণ্ডে গ্রেফতারির ২৪ দিনের মাথায় জেল থেকে ছাড়া পেলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। প্রেসিডেন্সি জেল থেকে আসানসোল সিজেএম আদালতে আনা হয় জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। আদালতের বাইরে তখন বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। জিতেন্দ্র তিওয়ারি গাড়ি থেকে নামতেই শুরু হয় উচ্ছ্বাস, স্লোগান। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তৃণমূলকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
কী বলেছেন বিজেপি নেতা?
ছাড়া পেয়েই বিজেপি নেতা বলেন, 'কোর্টের নির্দেশ হয়তো আমাকে এখন আসানসোলের বাইরে যেতে হচ্ছে। কিন্তু কোর্টের নির্দেশেই আবার ফিরে আসব।' এর পরেই সংযোজন, 'ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেব না।' তাঁর মতে, ক্লাস থ্রি-ফোরের বাচ্চারাও জানে কেন গ্রেফতার করা হয়েছিল। জিতেন্দ্রর কথায়, 'ভাবছে, আমি থাকলে ওদের খুূব অসুবিধা। তাই কোর্টকে বলে এই ধরনের অর্ডার এনেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনে কোর্ট অনুমতি দেবে, আসানসোলে আসব।' লোকসভা নির্বাচনে ৩ লক্ষ ভোটে জিতে থাকলে এত ভয় কেন, প্রশ্নও করেন বিজেপি নেতা।
প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের
পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, 'এখন হুঙ্কার দেওয়া ছাড়া আর কি কোনও উপায় রয়েছে জিতেন্দ্রর? উনি তো নিজেই বললেন, মাঠ ফাঁকা ছিল না। মাঠে প্লেয়ার হিসেবে ছিলেন। তাতেও ৩ লক্ষ ভোটে কেন হেরে গেলেন তার উত্তর ওঁকে দিতে হবে। সুতরাং এই ফাঁকা মাঠের কথা বলে লাভ নেই।' তৃণমূল রাজ্য সহ সভাপতি মনে করালেন, জিতেন্দ্রকে কয়েকজনের মৃত্যুর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল। 'সেটি অনিচ্ছাকৃত হলেও অপরাধ', মনে করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। প্রসঙ্গত, গত ১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। হুড়োহুড়ির মধ্যে প্রাণ যায় তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী-সহ তিন জনের। স্থানীয়দের দাবি, গতকাল কম্বল বিলি অনুষ্ঠানে আসানসোল পুরসভার প্রায় ৫টি ওয়ার্ড থেকে লোক এসেছিল। শুভেন্দু অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। উদ্যোক্তাদের তরফে ব্যবস্থাপনায় গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, প্রায় সকলেই শুভেন্দুর সঙ্গে সভাস্থল ছাড়েন। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন, স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর ও পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি, যিনি জিতেন্দ্রর স্ত্রী। ওই কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার পরই হুলস্থুল বাধে বলে জানা যায়। ওই ঘটনায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে গত ১৮ মার্চ, উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ।