কলকাতা : 'আমার কোনও পরিবার নেই। দলই হচ্ছে আমার পরিবার। মানুষই আমার পরিবার।' তৃণমূলের উপর মহলে ক্ষমতা নিয়ে টানাপোড়েন-জল্পনা যখন দিনে দিনে জোরাল হচ্ছে, তখন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এদিন পরিষদীয় দলের বৈঠকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সোমবারের বৈঠকে সাংগঠনিক রদবদল নিয়েও অভিষেকের রিপোর্টের কোনও উল্লেখই করেননি মমতা। আর এই ইস্যুতে এবার একযোগে মমতা-অভিষেকের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতা বললেন, "এই সংঘাত কতটা আছে জানি না। আমরা একটা সময় দেখতাম, সিপিএমের উপর যে রেগে যাচ্ছে, ফরওয়ার্ড ব্লকে যায়, আবার ফরওয়ার্ড ব্লকের উপর কেউ রেগে গেলে সিপিএমে যেত। তারা আবার আসন সমঝোতা করে নিত ভোটের সময়ে। বামঐক্য জিন্দাবাদ। ব্যানার্জি পরিবার জিন্দাবাদ বলে, এরা ভোটের সময়ে হয়তো এক হয়ে লড়বে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ ব্যানার্জি পরিবারকে, দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যানার্জি পরিবারকে, পিসি-ভাইপোকে একসঙ্গেই হারাতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করব। তবে, এখন একটু-আধটু তো আমরা খবর রাখি। একটু-আধটু তো হচ্ছে। সরাসরি ঘরের লোক না হলেও, বাকি তো কিছু কিছু জিনিস আমরা দেখতে পাচ্ছি। সেগুলো তো কিছু কিছু হচ্ছে।"
দিল্লি বিধানসভা ভোটের ফলে ফুটছে বঙ্গ রাজনীতির আঁচ। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, দিল্লিতে ভাই গেছে, এবার বাংলায় দিদিভাই যাবে। তখন তৃণমূলের পরিষদীয় দলের বৈঠকে সোমবার মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় দাবি করলেন, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে, দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্য়াগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূলই ক্ষমতায় ফিরবে। যা নিয়ে শুভেনদু অধিকারী বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের স্বপ্ন সবসময় পূরণ হয়, এমন নয়।
তাঁর কথায়, "তিনি তো মোদিজিকে অনেকবার তাড়িয়েছেন। উনি ২০১৯ সালে ব্রিগেডে সভা করে, ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ডাক দিয়েছিলেন। দিয়ে বলেছিলেন, এবার আমরা দিল্লি দখল করব। তারপরে ২০২১-এ তিনি এখান থেকে গিয়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়ালেন। বললেন, আমি গদ্দারকে হারাব। তাই এগুলো দেখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব ভবিষ্যদ্বাণী লাগে না। উনি বলেছিলেন, বাংলা দখল হয়েছে, এবার গোয়া দখল করতে যাব। এখানকার মায়েদের হাজার টাকা দেন, গোয়ার মায়েদের বলেছিলেন ৫ হাজার দেবেন। বড় একটা শূন্য নিয়ে এসেছেন। ত্রিপুরা দখল করতে গিয়েছিলেন। NOTA-র থেকে কম ভোট নিয়ে এসেছেন। অতএব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন সবসময় যে পূরণ হয় তা নয়। তিনি স্বপ্ন দেখতে পারেন। তাঁর লোকেদের ধরে রাখার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু, বাস্তব খুব কঠিন।"