কলকাতা: নরেন্দ্র মোদির 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' পাল্টানোর ডাক দিয়েছিলেন। দলে সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়, দলের তরফে সাফাইও দেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার পরও নিজের অবস্থানে অনড় শুভেন্দু। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে হিন্দু ভোট বৃদ্ধির পক্ষেই ফের সওয়াল করলেন তিনি। (Suvendu Adhikari)


হলদিয়ায় দলীয় সভায় সম্প্রতি  হিন্দু ভোট বৃদ্ধির কথা শোনা গেল শুভেন্দুর মুখে। তাঁর বক্তব্য, "মুসলিমরা বিজেপি-কে হিন্দুদের দল বলে। ৯৫ শতাংশ ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেয়। আর আমি যদি বলি যে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আরও পাঁচ শতাংশ হিন্দুকে এনে সরকার গড়তে হবে, ভুলটা কোথায় বলুন! নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত, সংবিধান মেনে চলা দল বিজেপি। কেন বলা হবে আমি হিন্দুদের দল করি? আমাদের এভাবে যদি দাগিয়ে দেওয়া হয়...আমার ৩৯ শতাংশ ভোট রয়েছে। আর যদি তিন শতাংশ ভোট বাড়াতে পারি, তাহলেই মমতা প্রাক্তন, ভাইপো জেলে।" (West Bengal BJP) শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পর তুমুল হাততালি, সঙ্গে 'জয় শ্রীরাম' রবও শোনা যায় সভায়।


পর পর নির্বাচনে হারের পর রাজ্য বিজেপি-র অন্দরের দ্বন্দ্ব বার বার সামনে চলে আসছে।  এর আগে, ১৭ জুলাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেই শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, "আমিও বলেছি রাষ্ট্রবাদী মুসলিম। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। কিন্তু আর বলব না। বলব, জো হমারে সাথ, হম উনকে সাথ। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ বন্ধ করো। সংখ্যালঘু মোর্চার কোনও প্রয়োজন নেই।" 


আরও পড়ুন: Governor Reshuffle: একাধিক রাজ্যে রাজ্যপাল বদল রাষ্ট্রপতির, কী হল পশ্চিমবঙ্গে?


শুভেন্দুর ওই মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হতে সময় লাগেনি। সেই পরিস্থিতি সাফাই দিতে এগিয়ে আসেন সুকান্ত। তিনি বলেন, "অনেকে অনেক প্রস্তাবই দেন। কোনটি গৃহীত হবে, কোনটি হবে না, সেটি রাজ্য সভাপতি এবং তাঁর টিম ঠিক করেন। আণাদের দলের যে সর্বভআরতীয় কাঠামো, তাতে সংখ্যালঘু মোর্চা রয়েছে। কাজি নজরুল ইসলাম, এপিজে আব্দুল কালাম, ওয়াজিদ আলি শাহের মতো মুসলিম, যাঁরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, সেই সমস্ত রাষ্ট্রবাদী মুসলিমদের দেশের সম্পদ মনে করে বিজেপি। সেই নীতি নিয়ে চলে দল, আগামী দিনেও চলবে। আমার দল এসব সমর্থন করে না।"


কিন্তু হলদিয়ায় শুভেন্দু জানিয়ে দিলেন, তিনি নিজের অবস্থানেই অনড়। এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর কথায়, "শুভেন্দু অধিকারী গত দু'-তিন বছর ধরে শুধুমাত্র ধর্মের নিরিখে সমাজকে ভাগ করার চেষ্টা করছেন। আজ না হয় কাল, ওঁকে জবাব দিতে হবে। ভারত তথা বাংলার মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ। তাঁরা ধর্মের ভিত্তিতে সমাজকে ভাগ করতে দেবেন না।"