দীপক ঘোষ, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : আনিস খানের (Anis Khan) মৃত্যুর বিচার চেয়ে মঙ্গলবার ধর্মতলায় ইনসাফ সভা করল SFI-DYFI। বিশাল জমায়েতের সেই কর্মসূচিকে কার্যত স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ (Bankim Ghosh)। বামেরা এতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। যদিও, বিজেপি বিধায়কের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে, বাম-বিজেপি আঁতাঁতের অভিযোগে সরব হয়েছে তৃণমূল।
চাকদার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বলেন, ওদের লড়াই তো মূলত তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ফলে ওরা যে ইস্যুটা নিয়ে লড়াই করছে, সেই ইস্যুটা তো তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের। ফলে এটা তো, আমরা সরাসরি নীতিগতভাবে ওদের সমর্থন না করলেও, কমন ইস্যু তো এসে যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। আমাদের লড়াই, ওদের লড়াই অনেক সময় এক হয়ে যাচ্ছে।
কার্যত বামেদের আন্দোলনের পাশে বিজেপি বিধায়ক । বিজেপির নবান্ন অভিযানের ঠিক এক সপ্তাহ পর, কলকাতায় আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে শক্তি দেখাল সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন। তৃণমূল যেখানে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ করে, সেখানে SFI-DYFI’এর ডাকে, দেখা গেল বিরাট জমায়েত। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে, অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল কলকাতা। ঠিক এক সপ্তাহ পর, ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতে সুবিচারের দাবি এবং দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করে শহরের রাজপথের দখল নিল SFI-DYFI সমর্থকরা।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বামেদের এই আন্দোলনকে কার্যত স্বাগত জানিয়েছেন চাকদার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। যিনি নিজে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বঙ্কিম ঘোষ বলেন, বামেরা যে লড়াইটা দিচ্ছে, মূলত আমাদের রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াইটা দিচ্ছে। আমরা চাই, বাম হোক, ডান হোক, সবাই মিলে, তৃণমূল কংগ্রেসটাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হোক। এখানে যা অনৈতিকতা চলছে, তৃণমূলটাকে না সরালে, এখানে অন্যান্য কোনও রাজনৈতিক দল, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে, এখানে কাজ করতে পারবে না।
কী বলেছিলেন শুভেন্দু ?
সম্প্রতি নবান্ন অভিযানের আগে ইঙ্গিতপূর্ণ আহ্বান শোনা গেছিল শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। তিনি বলেছিলেন, বাংলার মানুষ দেখতে পাচ্ছে। ৭৫ বছরে এই দৃশ্য কেউ দেখেনি। তাই CGO’তে গিয়ে লাভ নেই বামপন্থী বন্ধুরা। যেতে যদি সত্যি চান, আমাদের সাথে ১৩ তারিখে, নবান্ন চলুন। তার কারণ, সবাই বলছে, পার্থ-কেষ্ট চুনোপুঁটি, সব খেয়েছে? চোরেদের রানিমাকে ধরে যদি, টেনে নামাতে হয় ১৪ তলা থেকে, নবান্নই যেতে হবে।
এবার সেই সুর গেরুয়া শিবিরের আরেক বিধায়কের গলায়। তবে বঙ্কিম ঘোষ যখন কার্যত বামেদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তখন তাঁরই দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির গলায় শোনা গেছে উল্টো সুর। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, DYFI কোথায়, CPM কোথায়, যখন তাদের সামনে ছিল, তখন কিছু করতে পারেনি ওরা। এই চিটফান্ডের কেলেঙ্কারি, ইত্যাদি লুঠপাট তো শুরু করেছেন ওনারা। বৃক্ষ রোপণ করেছিলেন, বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিলেন, সেই বিষ ফল আমাদের খেতে হচ্ছে। ওরা যাই করুক, তাতে কিছু যায় আসে না।
সব মিলিয়ে বামেদের কর্মসূচির দিনে, বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য ঘিরে, রাজ্য রাজনীতি সরগরম।
আরও পড়ুন ; ‘আরএসএসকে নিয়ে আসতে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি হয়েছে’