অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : CBI, ED-কে শুধু দক্ষিণবঙ্গে দেখা যেত। বাম ও তৃণমূলের দৌলতে এখন আলিপুরদুয়ারেও পা রাখছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। সমবায় দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে এবার এভাবেই, বাম ও তৃণমূলকে নিশানা করলেন বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা (Manoj Tigga)। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল (TMC)।


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে, আলিপুরদুয়ারে সমবায় দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে CBI ও ED। জেলায় গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরাও। এই প্রেক্ষাপটে এবার সমবায় দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে উত্তরবঙ্গেও তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সভাপতি ও বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। একইসঙ্গে বিগত বাম আমলকেও বিঁধেছেন তিনি।

মনোজ টিগ্গা বলেন, " আমরা প্রথমত দেখেছি যে CBI, ED শুধু দক্ষিণবঙ্গে আমরা দেখেছি। কিন্তু, উত্তরবঙ্গের একটা মান-মর্যাদা ছিল। বামপন্থী ও টিএমসির দৌলতে আজ যেটা সমবায় দুর্নীতির তদন্তে CBI এবং ED আলিপুরদুয়ার টাউনে পা রেখেছে। এটা আমরা উত্তরবঙ্গবাসী এবং ডুয়ার্সবাসী হিসেবে আমরা লজ্জিত। যে এই ধরনের কাণ্ড করে আজ CBI, ED-কে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার শহরে পা দিতে হচ্ছে। CID তো রাজ্য সরকারের অধীনে আছে, তো রাজ্য সরকার যা বলবে, তাই করবে। ২০১৮-তে যখন বামপন্থীদের বোর্ড হয়েছে, তাদেরকে কিন্তু বাদ রাখা যায় না।"

এনিয়ে মনোজ টিগ্গাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী বলেন, "মনোজ টিজ্ঞা তো সাফাই গাইবেনই। যারাই বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধেই ইডি-সিবিআই লাগানো হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে যদি কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, বুকের পাটা থাকলে আপনারা তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান। বা, জনসমক্ষে সেইসব মানুষের নাম উল্লেখ করুন।"

আলিপুরদুয়ারের মহিলা ঋণদান সমবায় সমিতিতে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের দাবি, সংস্থাটিতে প্রায় ৫০ কোটি টাকা জমা রেখেছিলেন ২১ হাজার ১৬৩ জন। ৩ বছর ধরে তদন্ত চালালেও, CID-র ভূমিকায় সন্তুষ্ট না হতে পেরে, CBI ও ED-কে তদন্তভার দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকী কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, এই তদন্ত সারদাকাণ্ডের মতো হতে দেওয়া যাবে না।


আলিপুরদুয়ার জেলা সিপিএমের সম্পাদক কিশোর দাস বলছেন, "২০১৫ থেকে ২০১৮...এই সময়কালে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি প্রশাসক হিসাবে এই ব্যাঙ্কের দায়িত্ব সামলেছেন। যে দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে, সেটা ২০১৫-২০১৮ এই সময়কালের মধ্য়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে গেছে।"

এর আগে বিজেপি নেতা-নেত্রীদের একাংশ পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তোলায়, বিতর্ক চরমে উঠেছে। এবার দুর্নীতি ইস্যুতেও উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গের কথা শোনা গেল বিজেপি নেতা মনোজ টিগ্গার মুখে।