নয়াদিল্লি: 'আমার এলাকার জেলা পরিষদ প্রার্থী...ভোটগণনার দিন তাঁর চুলের মুঠি ধরে বাইরে ফেলে দিল... কিছু করতে পারলাম না। শুধু তাকিয়ে ছিলাম', বলতে বলতে অঝোর কেঁদে ফেললেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (BJP MP Locket Chatterjee)। নয়াদিল্লিতে দলের সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তুমুল অত্যাচার চলেছে মহিলাদের উপর। শহিদ দিবসে মণিপুর-কাণ্ড নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের এই ছবি তুলে ধরে তারই কি পাল্টা দিতে চাইলেন লকেট? 


আর কী বললেন? 
'মণিপুরে যা ঘটেছে, অত্যন্ত দুঃখের', মেনে নিয়েও লকেটের বক্তব্য, 'পাঁচলায় আমাদের এক কর্মীকে বুথের মধ্যে বিবস্ত্র করে গোপনাঙ্গে ...এমন সব করা হয়।' জেলা পরিষদ প্রার্থীর সঙ্গে যা ঘটেছে, সে কথা বলে পরে লকেটের দাবি, 'পুলিশকে বললাম...পুলিশ বলল, আপনি চলে যান। মুখ্যমন্ত্রীকে বললে উনি বলবেন, এসব ছোটখাটো ঘটনা।' এদিনই মণিপুরে নারী-নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে বিজেপি সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। বলেছেন, 'মণিপুরে যা চলছে, বেটি বাঁচাও স্লোগান দিয়েছেন আপনারা। আজ বেটি জ্বলছে। মণিপুর জ্বলছে,গোটা দেশ জ্বলছে।' এসেছে হালে রেসলারদের বিক্ষোভ-প্রসঙ্গও। বস্তুত, মণিপুরের ঘটনা নিয়ে বিরোধী শিবিরের একাধিক নেতারই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। সকলেরই প্রশ্ন, যেখানে গত আড়াই মাস ধরে মণিপুর জ্বলছে, সেখানে এত দিন কেন নীরব ছিলেন মোদি? কেনই বা আগে থাকতে সতর্ক হল না প্রশাসন? শহিদ দিবসে বিজেপি বিরোধিতার সেই সুর আরও এক ধাপ চড়ান মমতা-অভিষেক। তৃণমূলনেত্রী বলেন, 'আনেওয়ালা চুনাও মে মহিলা লোগনে ইন্ডিয়া থেকে দূরে ছুড়ে ফলবে রাজনীতির জন্য। মহিলা আমাদের সতী, সাবিত্রী, সীতা, অরুন্ধতী, রোশনারা, জাহানারা। আমাদের রাজবংশী থেকে শুরু করে মতুয়া থেকে শুরু করে সমস্ত মা বোনেরা আমাদের মা বোন।' পাল্টা লকেটের বক্তব্য, '২০১২ সালের সুজেট খানের ঘটনার কথা, উনি আজ নেই, মুখ্যমন্ত্রী বললেন ছোট ঘটনা। অ্যাফেয়ার ছিল। অ্যাফেয়ার থাকলেই কি অত্যাচার করে মেরে ফেলা যায়?' তাঁর আরও দাবি, 'এখন এলে দেখবেন, ৩ হাজার মহিলা বাচ্চাদের নিয়ে শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের শাড়ি ছিড়ে দেওয়া হয়েছে।' আসে আমতা, ডোমজুড়ের প্রসঙ্গ।   বলেন, 'নির্বাচন হয়ে গেল, গণনা হয়ে গেল।


নির্বাচন নিয়ে...
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, '৭১ হাজার বুথে ভোট হলেও ৩ জায়গায় অশান্তি হয়েছে।' সাংবাদিক সম্মেলনে তারও পাল্টা দিয়েছেন লকেট। মমতা বলেন, '৭১ হাজার বুথে ভোট হয়েছে।  বলেছেন, 'বহু জায়গায় গণনা হওয়ার আগেই প্রার্থী জিতে গিয়েছে। ...সিল করাব্যালট বাক্সের হদিস মিলেছে সাত দিন পর।...  ব্যাপক লুঠ চলেছে...গণতন্ত্রের হত্যা করা হয়েছে বলে মনে হয়।' সঙ্গে সংযোজন, ৫৭ জন কার্যকর্তা মারা গেলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাও দাবি করছেন, এগুলি বিক্ষিপ্ত ঘটনা।'
সব মিলিয়ে শহিদ দিবস অনুষ্ঠানে মমতা-অভিষেকের বক্তব্য ঘিরে যখন টানটান উত্তেজনা, অন্য দিকে তখন দিল্লিতে জবাব দিতে ব্যস্ত বিজেপি। 


 


আরও পড়ুন:কোথায় গেল আপনাদের বেটি বাঁচাও স্লোগান ? ২১ শের মঞ্চ থেকে মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার