পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : বাঁকুড়ায় ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের (Subhas Sarkar) বিরুদ্ধে বিজেপির বিক্ষোভ। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এবং বাঁকুড়ার বিজেপি (BJP) জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বাঁকুড়ার শালতোড়ায় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীদেরই একাংশ। 


বাঁকুড়া বিজেপি কিষাণ মোর্চার সহ সভাপতি রাহুল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের উপর আক্রমণ চালায়। আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়, ডেকোরেটরের জিনিস লুঠপাট করা হয়। আমাদের কর্মীরা আহত হন। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের জেলা নেতৃত্ব এবং আমাদের মন্ত্রী সুভাষ সরকার আজ পর্যন্ত কোনও খোঁজখবর না নেওয়ায় আজ আমরা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখালাম। আমরা বিজেপি কর্মীরা স্লোগান দিয়ে জেলা নেতৃত্বকে বলতে চাইছি, আপনারা নিয়ম মেনে সাংগঠনিকভাবে কাজ করুন।'


এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে (Central Minister) ঘেরাও করে ঘরে তালা বন্ধ করে দেন তাঁরই দলের কর্মীরা। কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে ঘেরাও করে তালা বন্ধ করে দেন বিজেপি কর্মীরা। বাঁকুড়া (Bankura) সাংগঠনিক জেলা বিজেপি কার্যালয়ে তালা বন্ধ করে দেওয়া হয় সাংসদকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে 'দূর হঠো' স্লোগান দিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলীয় কর্মীরা। 'জেলায় একনায়কতন্ত্র (Dictatorship) চালু করে দলের ক্ষতি করছেন সুভাষ সরকার', এমনই অভিযোগ করেন কর্মীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি দলীয় কার্যালয়ে এলে তাঁকে ঘিরেও প্রবল বিক্ষোভ, হাতাহাতিও হয়।


ওই দিন বাঁকুড়া জেলা সাংগঠনিক কার্যালয়ে আসেন সুভাষ সরকার। সেখানে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একটি বৈঠক করার কথা ছিল তাঁর। খবর পেয়ে বেশ কিছু বিজেপি কর্মী কার্যালয়ে জড়ো হন। তাঁরা প্ল্যাকার্ড হাতে এসে সুভাষ সরকার 'দূর হঠো', 'গো ব্যাক' স্লোগান তোলেন। বিক্ষোভকারীরা মূলত দাবি জানান, সুভাষ সরকার সাংসদ হয়েও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে একনায়কতন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে হস্তক্ষেপ করে যাচ্ছেন। সাংগঠনিক দিকে দিয়ে ভাল যেসব বিজেপি কর্মী রয়েছেন, তাঁদের একের পর এক নির্বাচনে বাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, লোকসভার নির্বাচনে তাঁরা বিজেপির বা সুভাষ সরকারের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন, খেটেছিলেন। তার জেরে বাঁকুড়ায় লোকসভার দু'টি আসনই বিজেপির দখলে চলে আসে। সুভাষ সরকার সাংসদ এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়ে যাওয়ার পরেই সাংগঠনিক দিকটা অনেকটা দুর্বল হয়ে যায়। এহেন কর্মীদের বাদ দিয়ে দেওয়াই, পৌরসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনেও (Assembly Election) জঙ্গলমহল বিজেপির হাতছাড়া হয়ে গেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও (Panchayat Election ) বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় বিজেপি খারাপ ফল করেছে।