অর্ণব মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ বিশ্বাস, বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা : রাজ্যে পরপর ডেঙ্গি ( Dengue ) আক্রান্তের মৃত্যুতে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ। কলকাতা পুরসভা ( KMC ) এলাকাই হোক বা জেলার বিভিন্ন পুর এলাকা, মৃত্যু রোখা যাচ্ছে না কিছুতেই। এদিকে সরকারি মতে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর সংখ্যা ৩ পেরোচ্ছে না গত কয়েকদিন ধরেই। আর এই নিয়েই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা।
ভাদ্র পেরিয়ে আশ্বিনেও বঙ্গে ভয়াবহ ডেঙ্গি। শুধু ডেঙ্গির চোখ রাঙানিই নয়, এ যেন মৃত্য়ুমিছিল! কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে
দক্ষিণ কলকাতার বাঘাযতীন, কলকাতার উপকণ্ঠে সল্টলেক, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ও ঘাটালে ৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্য়ু হয়! এর মধ্যে শুধু বৃহস্পতিবারই, অর্থাৎ এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। শুক্রবার ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়, কলকাতা পুর এলাকার রিজেন্ট এস্টেটের বাসিন্দা কল্পনা দত্তর। শনিবার ডেঙ্গি রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
একের পর এক ডেঙ্গি মৃত্যু
বৃহস্পতিবার, সল্টলেকে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এ ই ব্লকের বাসিন্দা মৃতের নাম পিনাক সরকার। ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে ডেঙ্গি শক সিনড্রোমের। একই দিনে, পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে ডেঙ্গিতে মৃত্য়ু হয় খড়গপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৩৮ বছরের রুনিতা মল্লিকের।
খড়গপুরের পাশাপাশি বৃহস্পতিবারই, ঘাটালেও ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এক মহিলার। মৃতের নাম সাবিনা বিবি।
শুক্রবারের পরিসংখ্যান
রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর পাশাপাশি, কলকাতা পুর এলাকায় রেকর্ড বাড়বাড়ন্ত ডেঙ্গির। ১ সপ্তাহের মধ্যে একলাফে ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়ল ১১০২ জন। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, গত সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৭০০ জন। সেই সংখ্যাটাই এদিন বেড়ে হল ৩৮০২। আর এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের প্রশ্ন, ডেঙ্গি মোকাবিলায় এতদিন ধরে কী করছিল পুরসভা, কী করছিল সরকার, কী করছিল প্রশাসন?
সরকারি মতে এখনও অবধি রাজ্য়ে ৩জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্য়ু হয়েছে। আর বেসরকারি সূত্রে দাবি, সংখ্য়াটা ৪১-এ পৌঁছে গেছে। এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন বিতর্ক। চলতি বছরে ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে দেয়নি বলে দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সেন্টার ফর ভেক্টর বোর্ন ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ওয়েবসাইটে। তথ্য বলছে, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গই এখনও পর্যন্ত কতজন ডেঙ্গি আক্রান্ত এবং ডেঙ্গিতে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, সেই সংক্রান্ত কোনও পরিসংখ্যান দেয়নি। এর আগে ২০২০, ’২১ এবং ’২২ সালে রাজ্য সরকার ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য কেন্দ্রকে পাঠালেও, ২০১৮ এবং ’১৯ সালেও কোনও তথ্য দেয়নি বলে কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে উল্লেখ। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আরও পড়ুন : 'আমার স্ত্রীকে খুন করেছে', চিকিৎসা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ পায়েলের স্বামীর