প্রকাশ সিন্হা, পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : হেফাজতে লালন শেখের ( lalan Seikh ) রহস্যমৃত্যুর পর প্রশ্নের মুখে পড়েছে সিবিআইয়ের (CBI ) ভূমিকা। সুপ্রিম কোর্টের ( Supreme Court  ) নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও, হেফাজতে থাকা লালনের ওপর নজরদারির জন্য CCTV ক্যামেরা ছিল না কেন? গলায় ফাঁস দেওয়ার মতো কাপড়ই বা কোথায় পেলেন লালন? এমন নানা প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।


বগটুই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত লালন শেখ আত্মহত্যা করেছেন, না তাঁকে পিটিয়ে মারা হয়েছে?  সেই প্রশ্নে এখন তোলপাড় রাজ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রশ্নের উত্তর সবথেকে সহজে মিলতে পারত, যদি রামপুরহাটে, সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের ভিতর সিসিটিভি ক্যামেরা থাকত। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশও রয়েছে। পরমবীর সিংহ সাইনি বনাম বলজিৎ সিংহের মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, দেশের সব থানার পাশাপাশি CBI, NIA, ED, NCB , DRI, SFIO'র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার লক আপ এবং জেরা করার ঘরেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। তাতে 'নাইট ভিশন' ও 'অডিও রেকর্ডিং'-এর ব্যবস্থা থাকতে হবে। 


কিন্তু, রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে এরকম ব্যবস্থা ছিল না বলেই সূত্রের দাবি।হাইকোর্টের নির্দেশে বগটুইকাণ্ডের তদন্ত শুরুর পর এই গেস্ট হাউসেই অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে সিবিআই।

ভিতরে ঘরে সিসিটিভি নেই

এখানে ঢোকা-বেরনোর রাস্তায় সিসিটিভি থাকলেও, ভিতরে ঘরে সিসিটিভি নেই। গেস্ট হাউস হওয়ায় এখানে কোনও লক আপ নেই। বাথরুমও ঘরের সঙ্গে অ্যাটাচ্ড। সূত্রের খবর, দিনভর জেরার পর সাধারণত, ধৃতদের এখান থেকে রামপুরহাট থানায় নিয়ে যাওয়া হত, সেখানকার লক আপে রাখার জন্য। কিন্তু, লালনের ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। তাঁকে গেস্ট হাউসেই রাখা হত। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, এত বড় মামলার, এরকম গুরুত্বপূর্ণ অভিযুক্ত হেফাজতে থাকলেও, তাঁর ওপর নজরদারির জন্য সিসিটিভি'র ব্যবস্থা করা হয়নি কেন? এটা কি সিবিআইয়ের গাফিলতি নয়?


 ফাঁস লাগানোর মতো কাপড় কোথা থেকে পেলেন


যে কোনও তদন্তকারী সংস্থাই সাধারণত লক আপে থাকা বন্দিদের বড় গামছা দেয় না। দেওয়া হয় ছোট তোয়ালে বা কাপড়ের টুকরো, যাতে তা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো না যায়। কিন্তু, লালনের মৃতদেহ উদ্ধার হয় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায়। সিবিআই হেফাজতে, লালন ফাঁস লাগানোর মতো কাপড় কোথা থেকে পেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সাধারণত লক আপে থাকা বন্দিদের বাথরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু, রামপুরহাটের গেস্ট হাউসে, সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে যে বাথরুম, তা ভিতরের ঘরের সঙ্গে অ্যাটাচ্ড। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সেখানে কি কোনও নিরাপত্তা ছিল না? তাহলে লালন এরকম ঘটনা ঘটালেন কীকরে?


সিবিআই সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি তাদের নজরে আছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে। এখনই কিছু বলা যাবে না। কারও গাফিলতি আছে কিনা, থাকলে কী গাফিলতি, তা দেখা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন :


'শুভেন্দুকে কোমরে দড়ি পরিয়ে গ্রেফতার করতে হবে' লালনের-মৃত্যু নিয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ মদনের