অর্ণব মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ বিশ্বাস ও অরিত্রিক ভট্টাচার্য : বউবাজারের বিপর্যস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের পুনর্বাসন নিয়ে KMRCL-এর সঙ্গে বৈঠক। সূত্রের খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপার্ট টিম ও আইআইটি রুরকির রিপোর্ট পাওয়ার পরই বাকি বিপর্যস্ত বাড়িগুলি নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হবে। এদিকে, বাড়ি বিপর্যয়ের জেরে আতঙ্কিত খোদ তৃণমূল বিধায়কের পরিবার।


তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন "আমার পরিবার বলছে, বাড়ি ছেড়ে চলে যাও... স্ত্রী-কন্যা উদ্বিগ্ন, ছেলে বিদেশে। চিন্তা করছে। এখানে ছাত্র, কৈশোর। সবাই আমায় চেনে এখানে। ২০০৭ থেকে আছে।"


বউবাজারে বাড়ি বিপর্যয়ের জেরে আতঙ্কিত খোদ তৃণমূল বিধায়কের পরিবার। এতদিনের পুরনো বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাঁরাও। একই দোলাচলে রয়েছেন দুর্গাপিটুরি লেনের অধিকাংশ বাসিন্দা। প্রত্যেকের মনে একটাই প্রশ্ন... কবে তাঁরা ফিরে পাবেন মাথা গোঁজার ছাদটুকু ? এনিয়ে চৌরঙ্গির তৃণমূল বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যাঁদের বাড়ি গেছে, তাঁদের তো চিন্তা থাকবেই। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক। এনারা তো বুঝতে পারছেন না, ফিট সার্টিফিকেট ক্র্যাক হয়ে গেছে।
 
রবিবার, পুনর্বাসন নিয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে বৈঠকে বসে KMRCL। বৈঠকে ছিলেন তৃণমূল সাংসদ, বিধায়ক, স্থানীয় কাউন্সিলর ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দারা। বৈঠকে সরাসরি ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় কাউন্সিলর। এক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দা মিটিংয়ের মধ্যেF বলেন, আপনারা তো রিপোর্ট তৈরি করাবেন। আপনাদের ওপর ভরসা নেই। আমরা নিজদের লোককে দিয়ে অ্যাসেস করাব। লং টার্ম বাড়িটা থাকবে তো ?


যদিও KMRCL-এর MD চন্দ্রনাথ ঝা বলেন, যাদবপুরের টিমের জন্য অপেক্ষা করছি। ১৯ থেকে ২৩টি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। আরও ২টো ভাঙতে হবে। আইআইটি রুরকিকে দিয়েও করাচ্ছি।


KMRCL কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চাইলেও মেটেনি ক্ষোভ। পুরসভা যেমন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সপার্ট টিমকে দিয়ে সার্ভে করাচ্ছে, তেমনই, KMRCL -এর তরফে আইআইটি রুরকিকে দিয়ে সার্ভে করানো হচ্ছে। এই দুই রিপোর্ট হাতে এলেই, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলিকে নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে সূত্রের খবর। কলকাতা উত্তরের তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বৈঠক যে একদম ফলপ্রসূ হয়নি, এমনটা নয়। এরা যে এরকম কেন করল। মমতা বলেছেন, প্রয়োজনে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। একটা ক্যাম্প হবে। কমিউনিকেট করবে।


কেউ ২০১৯ থেকে বাড়িছাড়া, কেউ সদ্য বাড়ি ছেড়ে হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। কবে আবার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু ফিরে পাবেন তাঁরা ? কবে আবার ফিরবেন সুখী গৃহকোণে ? তারই অপেক্ষায় দুর্গাপিটুরি লেনের অসহায় মুখগুলো।