কলকাতা: বোস-ব্রাত্য সংঘাত চরমে। শিক্ষামন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে গরহাজির ১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। ব্রাত্যর ডাকা বৈঠকে এলেন মাত্র ১২ জন রেজিস্ট্রার। সূত্রের খবর, গরহাজির রেজিস্ট্রারদের শোকজ করছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী (Bratya Basu) বলেন, 'রাজভবন থেকে মেসেজ করে নিষেধ করা হয়েছে রেজিস্ট্রারদের। হাড়হিম করা ঠান্ডা সন্ত্রাস কে তৈরি করছে?’ রাজ্যপালকে ফের বাছাই বিশেষণে বিদ্ধ করলেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্যর কথায়, 'ভেবেছিলাম খিলজি সম, আসলে মহম্মদ বিন তুঘলক। উনিই বিচারক, উনিই ফাঁসুড়ে, পুতুল খেলা খেলছেন।' ‘সিপিএম আমল হলে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়েই সন্তোষ ভট্টাচার্য হতেন। ভাঙচুর হত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে, মুখ্যমন্ত্রী ধৈর্য দেখাচ্ছেন।'
অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ-বিতর্ক নিয়ে বলতে গিয়ে, বৃহস্পতিবার বাংলা ভাষাতেই বাংলার সরকারকে নিশানা করেছিলেন রাজ্য়পাল বোস। ২৪ ঘণ্টা পর সেই আক্রমণের জবাব দিলেন শিক্ষামন্ত্রী বসু। শুক্রবার তা নিয়ে পাল্টা জবাব ফিরিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। আগেই রাজ্য়পাল প্রসঙ্গে তাঁর মুখে শোনা গেছিল, তালিবান, কৃষ্ণচন্দ্রের সভার শ্রেষ্ট বিদুষক, জেমস বন্ডের মতো বাছা বাছা বাক্য়বাণ। এদিন তার সঙ্গে যুক্ত হল মহম্মদ বিন তুঘলক,ফাঁসুড়ে, পুতুলখেলার মতো শব্দ।
রাজ্য়পালের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে বিতর্কের মধ্য়েই, শুক্রবার উপাচার্যদের এড়িয়ে বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রারদের নিয়ে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠকে ৩১ টি বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রারকে ডাকা হলেও অংশ নেন তার অর্ধেকেরও কম, মাত্র ১২ জন। অনুপস্থিত থাকেন ১৯ জন রেজিস্ট্রার।কলকাতা,প্রেসিডেন্সি,রবীন্দ্রভারতী,বর্ধমান,গৌড়বঙ্গ, ম্য়াকাউটের মতো বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রাররাও বৈঠকে আসেননি।শুক্রবার তাঁর পৌরহিত্য়ে বৈঠকে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রারের গরহাজিরা নিয়ে চাঞ্চল্য়কর দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “মেসেজ আছে, রাজভবন থেকে বারণ করা হয়েছে। যাতে না যায়। হাড় হিম করা সন্ত্রাস কে তৈরি করছে।’’
গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে, নবান্ন ও রাজভবনের সংঘাত জারি রয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে,সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কার্যত অর্থনৈতিক 'অবরোধ' তৈরির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিতর্কের আবহে রাজভবন নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়েই শুক্রবার সকালে গঙ্গাপুজোয় অংশ নেন রাজ্য়পাল। গঙ্গাপুজোর সময় রাজ্য়পালের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য। সদ্য নিযুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: C V Anand Bose: চরমে সংঘাত, রাজভবনের সামনে প্রতিবাদ প্রাক্তন উপাচার্যদের