উজ্জ্বল চক্রবর্তী, কলকাতা: লক্ষ্য ২৬ এর নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2026)। তার আগে শ্রমজীবী ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ (CITU Brigade) করে রবিবার, শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর ও বস্তি ফেডারেশনের ডাকে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। শনিবার সন্ধেবেলায় ব্রিগেড প্রস্তুতি পরিদর্শনে যান সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। অন্যদিকে জেলাগুলি থেকে ব্রিগেডমুখী হন বামেদের কর্মী-সমর্থকেরা। 

বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। ঘুঁটি সাজাতে ময়দানে নেমে পড়ছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। রাজ্য জুড়ে মেরুকরণের গোলকধাঁধায় কার্যত মাটি পাচ্ছে না বামেরা। এরই মধ্যে এবার, শ্রমজীবী মানুষকে পাখির চোখ করে, রবিবার, শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর এবং বস্তি ফেডারেশনের ডাকে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। শনিবার তুঙ্গে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। সন্ধেয় ব্রিগেড প্রস্তুতি পরিদর্শনে যান সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, "মানুষের বেঁচে থাকার যে লড়াই চলছে সেটাই আমাদের ব্রিগেড সমাবেশের মূল বার্তা। তাঁদের দাবি নিয়েই হবে ব্রিগেড সমাবেশ।''এবার ব্রিগেডের মূল মঞ্চটি দৈর্ঘে ৪৮ ফুট ও চওড়ায় ৩২ ফুট। ত্রি-স্তরীয় মূল মঞ্চের উচ্চতা ১০ ফুট। এখানেই বক্তব্য রাখবেন নেতা-নেত্রীরা। ব্রিগেডের মাঠে ভিক্টোরিয়ার দিকে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ, মঞ্চের মুখ থাকছে দক্ষিণ দিকে। মূল মঞ্চের নীচে থাকছে সাংস্কৃতিক মঞ্চটি। মূল মঞ্চের সামনে থাকছে দ্বি-স্তরীয় ব্যারিকেড, তারপরই সাধারণ কর্মী সমর্থকদের বসার জায়গা। প্রবল তাপদাহের কথা মাথায় রেখে মাঠ জুড়ে থাকছে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা। থাকছে দুটি মেডিক্যাল ক্যাম্প।রবিবার, শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্রিগেডে আসবে ৭টি মিছিল। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দুটি মিছিল শিয়ালদা ও হাওড়া স্টেশন থেকে ব্রিগেডমুখী হবে। দুপুর ৩টে তে শুরু করে সাড়ে় ৫টার মধ্যে সমাবেশের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে বামেরা। মূলত প্রচণ্ড তাপদাহের কথা মাথায় রেখে বেলার দিকে করা হয়েছে সমাবেশের সিদ্ধান্ত। শনিবার সন্ধে থেকেই জেলাগুলি থেকে আসতে শুরু করেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। মৌলালির রামলীলা ময়দানের কাছে কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূর দুরান্ত থেকে আসা কর্মীদের জন্য কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চল থেকে দলের তরফে হাতে তৈরি খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।২০১১ সালে মুখ থুবড়ে পড়া থেকে আর বাংলায় উঠে দাঁড়াতে পারেনি সিপিএম। ২০১৯-এর লোকসভায় শূন্য, ২০২১ এর বিধানসভায় শূন্য। ২৪ সালের তারুণ্যে ভর করা ব্রিগেডও লোকসভায় সিপিএম-এর খাতা খুলতে পারেনি। এমতাবস্থায়, শ্রমজীবী মানুষের কথা বলে, শূন্যের গেরো কাটাতে পারবে কি লাল ঝান্ডার দল? ফেরাতে পারবে পুরনো ভোটব্যাঙ্ক? বাংলায় ঘুরে দাঁড়াবে বামপন্থা? এবারের ব্রিগেড সমাবেশে বক্তার তালিকায় নাম রয়েছে, CITU-র সাধারণ সম্পাদক অনাদি সাহু। খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক নিরাপদ সর্দার। হুগলি জেলার খেতমজুর ইউনিয়নের নেত্রী বন্যা টুডু। কৃষক আন্দোলনের নেতা অমল হালদার। এছাড়াও অন্যান্য বারের মতো পরিচিত মুখের মধ্যে থাকছেন সিপিএম-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মূলত রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে জনবিরোধী নীতি, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের প্রতিবাদ সহ একাধিক ইস্য়ুতে এই সমাবেশ। সূত্রের খবর, ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে বাদ যাবে না মুর্শিদাবাদের ঘটনা বা ২৬ হাজার চাকরি বাতিল ইস্যু।