বর্ধমান: বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করল বর্ধমান GRP। দুর্ঘটনায় মৃত মাফিজা খাতুনের স্বামীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেরামতির দায়িত্বে থাকা রেলের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হয়েছে। ৩০৪ (এ), ৩৩৮ ছাড়াও রেলওয়ে অ্যাক্টের ধারায় মামলা রুজু করেছে বর্ধমান GRP।
বর্ধমান স্টেশনে যাত্রীদের মধ্যে আজও আতঙ্ক। গতকাল ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে জলের ট্যাঙ্ক। মৃত্যু হয় ৩ জনের। আহত হন ৩৪ জন। ১৮৯০ সালে তৈরি হয়েছিল এই ট্যাঙ্ক। যাত্রীদের অভিযোগ, ১৩৩ বছরের পুরনো ট্যাঙ্কের কোনও রক্ষণাবেক্ষণই হয় না। দীর্ঘদিন ধরে জল চুঁইয়ে পড়ছিল। রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কাজ হয়নি। ঠিকাদার দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষের কোনও নজরদারিই নেই। সেই কারণেই এ ধরনের ঘটনা বারেবারে ঘটছে।
যাত্রীদের আরও অভিযোগ, রেলের তরফে আগে থেকে ট্রেনের ঘোষণা না করায়, শেষ মুহূর্তে ফুটব্রিজে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এর ফলে পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ২০১৯-এর ৮ নভেম্বর এভাবেই ফুটব্রিজের একাংশ ভেঙে কয়েকজন জখম হন।
গতকাল বর্ধমান স্টেশনে আচমকাই ভেঙে পড়ল জলের ট্যাঙ্ক। এই ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৮ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৭-৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রেল সূত্রে খবর, বেলা ১২টা ৮ মিনিটে বর্ধমান স্টেশনের ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ভেঙে পড়ে জলের ট্যাঙ্ক। প্ল্যাটফর্মের শেড ভেঙে গুরুতর জখম হন বেশ কয়েকজন। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এর জেরে বর্ধমান স্টেশনের ১, ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। অন্য প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় ট্রেন। এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে রেলের যাত্রী নিরাপত্তা। গাফিলতি কার জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। তিন বছর আগে ২০২০-র ৪ জানুয়ারি, ব্যস্ত সময়ে তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল শতাব্দী প্রাচীন বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশপথের একাংশ। মৃত্যু হয় একজনের।