উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, ধূপগুড়ি: রাত পোহালেই ধূপগুড়িতে বিধানসভা উপনির্বাচন (Dhupguri By Election)। ভোট দেবেন আড়াই লক্ষেরও বেশি ভোটার। কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী না তৃণমূল-বিজেপি? কার পাশে থাকবেন ধূপগুড়ির বাসিন্দারা? ঠিক হয়ে যাবে কালই। তবে ভোট শুরুর আগেই সন্ত্রাস আতঙ্কে ভুগছেন ভোটকর্মীদের একাংশ। দেখা দিয়েছে সাপের আতঙ্কও।


ধূপগুড়িতে বিধানসভা উপনির্বাচন: সংঘর্ষ, ব্যালট লুঠ, খুন, রক্তক্ষয়ী পঞ্চায়েত ভোটের ক্ষত নিয়ে, মঙ্গলবার আবার ভোট হতে চলেছে বাংলায়। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে বিধানসভা উপনির্বাচনে, ফের নিজেদের রায় EVM-এ দেবেন ভোটাররা। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে এবার ভোট হবে ২৬০টি বুথে। থাকছে ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটার আড়াই লক্ষের বেশি।কিন্তু, এসবের মাঝেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা ভুলতে পারেননি ধূপগুড়ির ভোটকর্মীরা।

আদালতে নির্দেশে শেষমেশ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট হলেও, অনেক জায়গাতেই তাঁদের সেভাবে দেখা মেলেনি। তারপরও ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই ভরসা রাখছেন ভোটকর্মীদের একাংশ। এক ভোটকর্মী বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে গেছিলাম, সবটাই লুঠ হয়ে যায়, চোখের সামনে দেখেছিলাম, কিন্তু কিছু করতে পারিনি।’’

একেই সন্ত্রাস আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। তার উপর ধূপগুড়িতে ভোটকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সাপের আতঙ্ক। পরিত্যক্ত এক বাড়িতে হয়েছে ভোটকেন্দ্র। আর তার পাশেই ধরা পড়ল সাপের দৃশ্য।এরকম এক ভোটকেন্দ্রে তাঁরা থাকবেন কীভাবে? ভেবেই আতঙ্কে ভোটকর্মীরা। এক ভোটকর্মী বলেন, “কী করব, অন্য কিছুর সঙ্গে লড়াই করা যায়, সাপের সঙ্গে কীভাবে করব? বলেছি অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করার জন্য।’’

১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত টানা বামেদের দখলে ছিল ধূপগুড়ি। ওই বছর মিতালি রায়কে ভোটে দাঁড় করিয়ে, ধূপগুড়ি ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল।তবে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে ফলের নিরিখে,সেই ধারা বজায় রেখে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও তৃণমূলকে হারিয়ে ধূপগুড়ি আসনটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি।বিজেপি প্রার্থী বিষ্ণুপদ রায়ের কাছে হেরে যান মিতালি।বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুর কারণে, ফের ভোট হচ্ছে ধূপগুড়িতে।

অন্যদিকে আবার উপ নির্বাচনের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে, রবিবার সবাইকে চমকে দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন গতবারের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী। যাকে আগের দিনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে দেখা গেছিল।এই প্রেক্ষাপটেই সবার নজরে এখন ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের দিকে।কারণ, মোদি সরকারকে হঠাতে জাতীয় স্তরে তৃণমূলের পাশে থাকলেও, ধূপগুড়িতে তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে একজোট সিপিএম ও কংগ্রেস। সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়কে সমর্থন করছে কংগ্রেস। কিন্তু, সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূলের এই দিল্লিতে 'দোস্তি' আর বাংলায় 'কুস্তি' কি ভালভাবে নেবেন ধূপগুড়ির ভোটাররা?না কি মাঝখান থেকে সুবিধা ভোগ করবে বিজেপি? সব উত্তর জানা যাবে ৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার।


আরও পড়ুন: Bratya Basu: 'কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভার শ্রেষ্ঠ বিদূষক' শিক্ষামন্ত্রীর নিশানায় রাজ্যপাল