কলকাতা: অনুব্রতর মণ্ডলের (Anubrata Mandal) মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal)-সহ ছ’জনের হাজিরার নির্দেশ প্রত্যাহার। প্রত্যাহার টেট পাস সার্টিফিকেট (TET Pass Certificate) পেশ করার নির্দেশও। নির্দেশ প্রত্যাহার করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় (Judge Abhijit Ganguly)। 


টেট পাস নিয়ে আপাতত হাজিরা দিতে হচ্ছে না সুকন্যা মণ্ডলকে


গরুপাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরই তাঁর মেয়ের স্কুলে চাকরি পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েই প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন, স্কুলেও যান না, বাডি়তে হাজিরার খাতা এসে পৌঁছয়, এমন নানা অভিযোগ সামনে আসে। এসএসসি নিয়ে আগে থেকেই মামলা চলছিল আদালতে। তাতে সুকন্যাকে নিয়ে নতুন হলফনামা জমা পড়ে। অনুব্রতর আরও পাঁচ আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।


তার জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে সুকন্যা এবং ওই পাঁচ জনকে কলকাতা হাইকোর্ট হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। টেট পাসের শংসাপত্র-সহ, চাকরির নিয়োগপত্রের নথি আদালতে জমা দিতে বলা হয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকালেই বোলপুর থেকে কলকাতার চিনার পার্কের বাড়িতে চলে আসেন সুকন্যা। দুপুরে হাইকোর্টেj ১৭ নম্বর এজলাসে পৌঁছন তিনি। 


কিন্তু সেখানে শুনানি চলাকালীন নির্দেশ প্রত্যাহার করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জানা যাচ্ছে, প্রাথমিকের যে মূল দু’টি মামলা রয়েছে, তাতেই অতিরিক্ত হলফ নামা জমা পড়ে সুকন্যা এবং ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে। ওই অতিরিক্ত হলফনামা খতিয়ে দেখেছেন বিচারপতি। তাতে তাঁর মনে হয়েছে, পুরনো মামলা এই মুহূর্তে যে পর্যায়ে রয়েছে, তাতে নতুন হলফনামা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই সেটি গৃহীত হয়নি। তাই আগের নির্দেশ কার্যকরী থাকে না। তাই সুকন্যা এবং ওই পাঁচজন আদালতে হাজিরা দেওয়া এবং শংসাপত্র পেশ থেকে আপাতত নিস্তার পেলেন। 


আরও পড়ুন: Anubrata Mandal Arrested: ‘গরুচোরের মেয়ে, কিছু বলার মুখ আছে!’ আদালতে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়লেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা


তবে মামলাকারীদের অন্য সুযোগ দিয়েছেন বিচারপতি। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজন মনে করলে অন্য ভাবে নতুন মামলা দায়ের করে, তাতে নতুন আকারে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু পুরনো মামলার ক্ষেত্রে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আপাতত আদালতে হাজির হওয়া এবং নথি জমা দেওয়া থেকে নিস্তার পেলেন সুকন্য়া এবং ওই পাঁচ জন। 


পাসের শংসাপত্র, নিয়োগপত্র নিয়ে আদালতে পৌঁছন সুকন্যা


গরুপাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরই তাঁর মেয়ের চাকরি পাওয়া, তাঁর নামে থাকা কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাতেই আদালতে ডাক পড়ে সুকন্যার। সেই মতোই এ দিন নথিপত্র নিয়ে আদালতে পৌঁছন সুকন্যা। কিন্তু সেখানে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। তাঁকে ‘গরুচোরের মেয়ে’ বলে কটাক্ষ করা হয় আদালত চত্বরে। কটাক্ষ করে এক মহিলা বলেন, ‘‘ ‘‘বাবা গরু চোর, তাঁর মেয়ে। এঁদের এত গার্ড করে নিয়ে যাচ্ছেন!’’’ মেয়ের চাকরি নিয়ে প্রশ্নের মুখে অনুব্রত যদিও আত্মবিশ্বাসীই। এ দিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার সময় তিনি জানিয়ে দেন, মেয়ে টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাই কোনও চিন্তা কারণ নেই। গতকাল অনুব্রতর ভাইও জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে টেট পাসের শংসাপত্র রয়েছে। বৈধ ভাবেই চাকরি করছেন তিনি।