সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ময়নায় (Moyna BJP Leader Murder) বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় পুলিশি তদন্তে বিস্মিত হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে না পারায় ৫ অগাস্ট দুপুরেই ৩ অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর হয়। বিচারপতির বক্তব্য, 'অভিযুক্তদের জামিন পাইয়ে দিতেই অসৎ উদ্দেশ্য পুলিশের। চার্জশিটে ৪ অগাস্টের সই, কোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে ৫ অগাস্ট!' ময়নায় বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া খুনের মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি আরও বলেন, 'কেন তদন্ত অন্য সংস্থাকে দিতে হয়, তার অন্যতম খারাপ নিদর্শন এই ঘটনা।' সঙ্গে প্রশ্ন, 'কেন এই পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়?' কেস ডায়েরি তলব করেছেন বিচারপতির। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর শুনানি। 



প্রেক্ষাপট...
গত ১ মে, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় খুন হন বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া। অপহরণ করে খুনের অভিযোগ তোলে পরিবার। ভর সন্ধেয় বাড়ি ফেরার পথে স্ত্রীর সামনেই প্রথমে মারধর করা হয়েছিল বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে। এরপর তাঁকে মোটরবাইকে চাপিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা, দাবি পরিবারের। ওই দিনই গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে বিজেপি নেতার দেহ মেলে। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছিল তাঁকে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করে পুলিশ। রাতে থানার সামনে ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দার নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, খুনের পিছনে হাত রয়েছিল ময়নার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সংগ্রাম দলুইয়ের। প্রাক্তন বিধায়কের পাল্টা অবশ্য দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই খুন। পঞ্চায়েত ভোটের গোটা পর্বে বিরোধী শিবিরের নেতা-কর্মী খুনে একাধিক বার আঙুল উঠেছিল শাসকদলের দিকে। বস্তুত, ময়নাতেই আর এক দলীয় নেতা খুনের প্রতিবাদে বনধের ডাক দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেছিলেন,'পরিবারের সামনেই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের কাছে থেকে বিজেপি নেতার নিথর দেহ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। চোরের মতো দেহ নিয়ে মর্গে রেখেছে পুলিশ।' 
এর ঠিক আগে, গত ২৯ এপ্রিল বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র সাউকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। আসানসোল পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির আহ্বায়ক ছিলেন রাজেন্দ্র। তাঁকে জাতীয় সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাদা স্করপিও গাড়ির ভিতর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা। এরপর থেকেই পুলিশি তদন্ত গাফিলতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলে পরিবার। 
এবার ময়নার ঘটনায় হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন পুলিশ আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত, আগেও বিজেপি নেতার পরিবারের সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাইকোর্টের ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছিল। নির্দেশের পরেও কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়নি, তাই নিয়ে ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট। 


আরও পড়ুন:গলার নলিকাটা অবস্থায় মুম্বইয়ে উদ্ধার বিমানসেবিকার দেহ, ধৃত হাউজিংয়ের ঝাড়ুদার