সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: সম্প্রীতি রক্ষা করুন। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেটাই রাজ্যের লক্ষ্য হওয়া উচিত। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে নির্দেশ হাইকোর্টের। অশান্তি রুখতে কী পদক্ষেপ, খতিয়ান দিয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ করল রাজ্য। শান্তি ফেরাতে সেনা নামাতে সওয়াল মামলাকারীদের।
বিজেপি নেত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যে পর কয়েক দিন ধরে জায়গায় জায়গায় অশান্তি। বিক্ষোভ, ভাংচুর, অবরোধ বাদ যায়নি কিছুই। অশান্তির আবহে দেখা গিয়েছে সৌহার্দ্যের ছবিও। এই প্রেক্ষিতে বুধবার সম্প্রীতি রক্ষার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, সবাই সম্প্রীতি রক্ষা করুন।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির প্রেক্ষিতে, সেনা-আধা সেনা নামানো, সিট গঠন - সহ একাধিক দাবিতে ৬টি মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে।
এ দিন রিপোর্ট পেশ করে রাজ্যের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, হাওড়ার ৫ জায়গায় ঘটনা ঘটেছে। ১৭টি এফআইআর হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে ৯৯ জনকে। হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় হয়েছে ৯টি এফআইআর, গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৮ জনকে।
পাশাপাশি, বারাসাত, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর, কৃষ্ণনগর, খড়গপুর, শিয়ালদা সহ বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় এফআইআর করা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার হয়েছে। শেষ ৪৮ ঘণ্টায় কোনও ঘটনা ঘটেনি।
মামলাকারীদের আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল, সুস্মিতা সাহা দত্তরা বলেন, প্রতিবাদের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কেন হবে? নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া রাজ্যের দায়িত্ব। কিন্তু রাজ্যই অশান্তি করার সুযোগ করে দিয়েছে। এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের একটা অংশ এই অশান্তির ঘটনায় যুক্ত ছিল না বলে আমাদের ধারণা।
শুধু তাই নয়, মামলাকারীদের আইনজীবীরা বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক, ধর্মীয় মিছিল বন্ধ করা প্রয়োজন। কোন মিছিলের অনুমতি যেন না দেওয়া হয়। পাশাপাশি, তাঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে সেনা নামানো উচিত। না হলে অদূর ভবিষ্যতে আবার অশান্তি হতে পারে। অন্য রাজ্যে আমরা বুলডোজার দেখেছি, এখানে আমরা সেটা চাই না, আমরা চাই আইন মেনে সব হোক।
এরপরই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য-মামলাকারীদের বলব, আপনারা যে দলেরই হোন না কেন সম্প্রীতি রক্ষা করুন। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেটাই রাজ্যের লক্ষ্য হওয়া উচিত।