সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে কেন ধাম বলা হবে। এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন অনেকে। বিশেষত পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে এ নিয়ে সরাসরি আপত্তি জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (দক্ষিণবঙ্গ)। কিন্তু এতদিন হয়ে গেলেও মামলার অগ্রগতি হয়নি। কারণ মামলাকারী পক্ষ নিজেদের অভিযোগ প্রমাণের জন্য নথিই দিতে পারেনি। অবশেষে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল আদালত।
এর আগে একাধিকবার মামলাকারীর অনুরোধে পিছনো হয় শুনানি। কিন্তু বারবার সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও কোনও নথি দাখিল করতে পারেনি তারা। আজ, মঙ্গলবারও ছিল মামলার শুনানির দিন। কিন্তু এতদিন পরও নথি হাজির করতে না-পারায় জনস্বার্থ মামলাটি খারিজ করে দেন বিচারপতি। দিঘার জগন্নাথ ধাম সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের করা মামলাটি খারিজ হয়ে গেল হাইকোর্টে।
বিচারপতি বলেন, 'অতিরিক্ত নথি দাখিল করার সুযোগ দেওয়া হলে নথি দাখিল হয়ন। কতবার নথি দাখিল করার জন্য শেষ সুযোগ দেওয়া হবে? বারবার শেষ সুযোগ দিলে তো "শেষ" শব্দ তার মানে হারাবে'। এমনই মন্তব্য করেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। বলেন, চাইলে সম্পূর্ণ নথি জমা দিয়ে নতুন করে মামলা করা যেতে পারে।
এর আগে দীঘার মন্দিরের সঙ্গে ধাম শব্দের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি জানান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। লিখেছিলেন'ধাম শব্দটির ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব রয়েছে। ভারতের চার ধাম বদ্রীনাথ, দ্বারকা, পুরী, রামেশ্বরম এই ঐতিহ্যের অংশ। পুরীর শ্রীজগন্নাথ মন্দির সেই স্থান যেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবছর রথযাত্রায় অংশ নেয়। কিন্তু দিঘায় ‘জগন্নাথ ধামট তৈরি করে সেই ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় পবিত্রতাকে নকল করা হয়েছে'।
অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য তিথিতে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেদিনই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের ছবি ও প্রসাদ বাংলার বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর নির্দেশ দেন তিনি। এই প্রসাদ নিয়েও পরে মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করে প্রসাদের নামে স্থানীয় দোকানের মিষ্টি পাঠানো হবে।