কলকাতা: বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে সাময়িক রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ, নির্দেশ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha)। তবে সাংসদের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিচারপতি মান্থা। বলেছেন, 'সৌমিত্র যে ভাষা ব্যবহার করেন বলে পুলিশের দাবি, তা অত্যন্ত খারাপ। এক জন সাংসদের কাছে এই ধরনের ভাষা একেবারে প্রত্যাশিত নয়।' প্রসঙ্গত, গত ১৩ এপ্রিল সোনামুখী থানায় জোড়া এফআইআর (FIR) দায়ের হয়েছিল সৌমিত্রর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় রক্ষাকবচ পেলেন বিজেপি সাংসদ।
কী নিয়ে মামলা?
গত এপ্রিলে বাঁকুড়ায় প্রায় ২০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে টাকা তছরুপের অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। গত ১১ এপ্রিল মানিকবাজারে এনিয়ে বিক্ষোভও দেখান স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। সেখানেই সোনামুখী থানার আইসিকে হুমকি দিতে শোনা যায় বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। সে সময় তিনি বলেন, 'আইসি অনেক দিন ধরে দাদাগিরি করছে আমি জানি। আইসি শুনে রাখ তোর বাপের ক্ষমতা নেই এখানে কিছু করার। যদি করতে আসিস তোরও পরিবার আছে আমরাও দেখে নেব।' অভিযোগ তিনি আরও বলেন, 'আইসিকে আমরা হাইকোর্টে ডেকে পাঠাব, তারপর কী ব্যবস্থা করা যায় দেখব, বলে হুমকি।' বিজেপি সাংসদের সেই মন্তব্য়ের প্রেক্ষিতে তুঙ্গে ওঠে বিতর্ক।
যদিও তার পর INTTUC-র বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সোমনাথ মুখোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুরের সাংসদকে পাল্টা হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। তিনি বলেছিলেন, 'কুকুরের কাজ কুকুর করেছে, কামড় দিয়েছে পায়ে, তা বলে কি কুকুরকে কামড়ানো মানুষের শোভা পায়?' একাংশের দাবি, বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের উদ্দেশেই এই ভাষা ব্যবহার করেছেন সোমনাথ। এতেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেন, 'সৌমিত্র খাঁ যদি বাপের ব্যাটা হয়ে থাকিস, সোনামুখীতে একবার পা দিয়ে দেখা। পাগুলো যদি ভেঙে দিতে না পারি তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস করা ছেড়ে দেব।' তিনি মনে করেন, 'এরকম সাংসদকে মেরে পা ভেঙে দেওয়াই উচিত।' পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। পদ্মশিবিরের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি নীরজ কুমার বলেন, 'পুলিশ যদি এর পরও গ্রেফতার না করে তা হলে ভাবব তৃণমূলকে ওরা মদত দিচ্ছে।' যদিও রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে ভাবে দু-তরফ থেকেই হুমকি-হুঁশিয়ারি-কুকথার রাজনীতি বাড়ছে, তাতে নির্বাচন ঠিকঠাক হবে তো?