সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: আদালতের নির্দেশের পরেও ধর্মতলায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের ধর্নাস্থলে হাজির হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই নিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলেছিল রাজ্য সরকার। কেন আদালতের নির্দেশ মানা হল না, সেই প্রশ্ন তুলে এবার বিরোধী দলেনেতাকে সতর্ক করল কলকাতা হাইকোর্ট। (Calcutta High Court)

বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের ধর্নাস্থলে হাজির হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই নিয়েই এবার তাঁকে সতর্ক করল কলকাতা হাইকোর্ট। অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের যে সংগঠনের তরফে মামলা করা হয়, তাদের আইনজীবীকে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, "আদালতের সঙ্গে কারসাজি করলে সমস্যা আছে। অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের প্রতি সহানুভূতি আছে। আপনারা যখন মামলা করেছিলেন, বা অনুমতি চেয়েছিলেন, সেই সময় কোনও রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা ছিল না আপনাদের সঙ্গে। কিন্তু এখন সরকারের তরফে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাতে কিন্তু অ্যাজেন্ডা প্রকাশ্যে আসছে। কিন্তু কেন নির্দেশ মানছেন না? আদালত এই মুহূর্তে কোনও পদক্ষেপ করছে না। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন হলে রং না দেখেই আদালত কঠোর পদক্ষেপ করবে, সেটা শাসক হোন বা বিরোধী।" (Suvendu Adhikari)

অন্য দিকে, মামলাকারীদের তরফে জানানো হয়, শুভেন্দু গিয়েছিলেন বটে। কিন্তু যখন জানতে পারেন রাজনৈতিক পদাধিকারীদের থাকা বারণ, তিনি ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। আদালত গোড়াতেই জানিয়েছিল, বিজেপি-র কোনও পদাধিকারী ধর্নাস্থলে থাকতে পারবেন না। কিন্তু তার পরও দেখা যায়, পুলিশের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয় উদ্যোক্তাদের। এর পরই বিষয়টি আদালতে পৌঁছয়।

গত পয়লা সেপ্টেম্বর মেয়ো রোডে তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খুলে দিয়েছিল সেনা। মঞ্চ খোলার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমি যখন এখানে আসছিলাম, আপনারা অনেকে ছবিও পেয়েছেন। প্রায় ২০০-র মতো সেনা, তাঁরা আমাকে দেখে ছুটে পালাচ্ছিল।"

মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হতে সময় লাগেনি। সেনাবাহিনীর অপমানের অভিযোগে, গাঁধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ করতে চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন জানান অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের একাংশ। বুধবার, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের গাঁধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভের অনুমতি দেন বিচারপতি ঘোষ। কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন, বিজেপি-র কোনও পদাধিকারি কর্মসূচিতে থাকতে পারবেন না। তার পরও শুভেন্দু অবসরপ্রাপ্ত ধর্নাস্থলে হাজির হন। সেই নিয়ে আদালত অবমাননার অভিযোগ তোলে তৃণমূল। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। আর তার প্রেক্ষিতেই কড়া মন্তব্য় করল আদালত।