কলকাতা: ছাত্র ধর্মঘটের সময় পুলিশি অত্যাচারের জোড়া মামলাতেই SIT গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালতের নির্দেশ, IPS মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে SIT গঠন করতে হবে। জোড়া মামলার শুনানি হবে মেদিনীপুরের বিশেষ আদালতে।
যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে গত ৩ মার্চ ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। সেই ঘটনায় মেদিনীপুর মহিলা থানার OC-র বিরুদ্ধে নির্মম অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছিল DSO। সেই একই অফিসারের বিরুদ্ধেও অভিযোগে সরব হয় SFI -ও। সেই জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। মেদিনীপুরে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে মামলায় হাইকোর্ট বলেছে, 'সুচরিতা দাসের ক্ষেত্রে হেফাজতে অত্যাচারের প্রমাণ সিসি ফুটেজে আছে। কুহেলি দাস নামে একজন কনস্টেবল সুচরিতার চুলের মুঠি ধরে ধাক্কা মারছেন। অত্যাচারের প্রমাণ আছে, DSP-র রিপোর্টও বিশ্বাসযোগ্য নয়।' এর পাশাপাশি সুশ্রীতা সোরেনের ক্ষেত্রে যে FIR এর ভিত্তিতে মামলা, তাতেই সন্দেহ হাইকোর্টের। FIR-এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আদালত সন্দিহান বলেও মন্তব্য হাইকোর্টের।
AIDSO সমর্থক ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সুশ্রীতা সোরেন। ছাত্র ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, "আমি যখন আমার নাম, পরিচয় লিখছি, ওসি বলল, মোমবাতি নিয়ে এসো। মোমবাতি তারা (পুলিশ) নিয়ে এসে সেটাকে জ্বালিয়ে, সেই মোমবাতির জ্বলন্ত যে মোম, সেটা আমার হাতে ঢেলে দেওয়া হয় এবং পায়ের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এই য়ে হাতের এখানে মোমবাতির মোম ঢেলে দেওয়া হয়েছে। এখনও সেই চিহ্ন আছে।এই ভাবে আমাকে মারতে থাকে। থানার ওসি বলছেন, "আমাদের এই থানার অনেক বড় জায়গা আছে, যেখানে তোমাদেরকে মেরে পুঁতে দিলেও কিন্তু কেউ কোনও খোঁজ পাবে না। এই রকমভাবে আমাদের থ্রেট দেয়।"
মেদিনীপুর কলেজের SFI নেত্রী সুচরিতা দাস অভিযোগ করে বলেছিলেন, "গাড়ির ভিতরে যখনই তুলেছে, তখন থেকেই নানাভাবে অত্যাচার করেছে। সেখানকার ওসি সাথী বারিক, আমার সঙ্গে ফোনে স্পিকারে কথা বলে বলছে, তোর কোন বাপ আছে, কতগুলো বাপ আছে, কোথায় কোথায় বাপ আছে, সবাইকে ডাক। কে তোকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটা আমিও দেখব। স্যালাইনকাণ্ডে আমরা যখন আন্দোলনরত অবস্থায় ছিলাম, তখন থেকেই তারা নাকি আমাদের টার্গেট করে রেখেছিল, যে আমি তাদের ডিপার্টমেন্টে চিহ্নিত হয়ে আছি। সেই জন্য তাদের ইচ্ছামতো, তারা নিজেরাই বলছে, "তোর ওপর আমরা নিজেদের সুখ মিটিয়ে নিতে চাই। তোকে প্রচুর মারব। নিয়ে গিয়ে আরও মারব।" আমাকে থাপ্পড় মেরেছে। আমার গালে এখানে কেটে গিয়েছে। হাতে বুট দিয়ে লাথি মেরেছে। বিভিন্ন জায়গায় আমার কালশিটে পড়ে গিয়েছে।''