সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : রাজ্য নির্বাচন কমিশনার (State Election Commissioner) রাজীব সিন্হার বিরুদ্ধে রুল জারি হাইকোর্টের। আদালত অবমাননার রুল জারি করে রাজীবকে হাজিরার নির্দেশ প্রধান বিচারপতির। শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা মামলায় রাজীব সিন্হার বিরুদ্ধে রুল জারি আদালতের। আগামী ২৪ নভেম্বর সশরীরে হাজিরা দিতে হবে রাজীব সিন্হাকে, এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অবমাননার অভিযোগে মামলা করেছিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই গত ৮ জুন তড়িঘড়ি মাত্র এক দফায় পঞ্চায়েত ভোটের (৮ জুলাই) দিন ঘোষণা থেকে শুরু করে, দিকে দিকে মনোনয়নে বিরোধীদের বাধাপ্রাপ্ত হওয়া, কিংবা কেন্দ্রীয় বাহিনীর আসা বন্ধ করতে আদালতে আদালতে ঘোরা আর সবশেষে পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) মৃত্যুমিছিল, এসবের জেরে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হার (Rajiva Sinha) ভূমিকা।
এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর (Central Force) দাবি করে, কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। এই মামলায় গত ১৩ জুন কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে হবে পঞ্চায়েত ভোট। এরপরই, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নেওয়ার কথা জানান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।
এরপর, পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত রায়ের অংশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। এই মামলায়, রাজ্য় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় অত্য়ন্ত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of Calcutta High Court) নির্দেশে বলেন, শুধু স্পর্শকাতর জেলায় নয়, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে সব জেলাতেই মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মানার কথা বলা হলেও, পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এরপরই, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার। এই মামলায়, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)।
এর মধ্যেই, রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ না মানায় আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি। এই মামলাতেই, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব জেলার জন্য পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার পাশাপাশি কত সংখ্যক বাহিনী চাইতে হবে, তাও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই শুক্রবার আদালত অবমাননার রুল জারি করে রাজীব সিন্হাকে হাজিরার নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতি।