ঊজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা: রাজ্য বিদ্যুত্‍ দফতরের দুই সংস্থা কর্মীদের বকেয়া ডিএ এখনও না মেটানোয় ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা আজ আদালতে বলেন, ‘‘রিভিউ পিটিশন করলেই, পুরনো টাকা মেটানোর নির্দেশ কার্যকর করতে হবে না, এমন সুযোগ তৈরি হয় না। আগের বকেয়া মেটাতেই হবে।’’ এদিন, বকেয়া ডিএ’র দাবিতে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে সভা করে, বাম সমর্থিত সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ সেটেলমেন্ট কর্মচারী সমিতি। ডিএ কর্মীদের অধিকার। এটা দয়া নয়, এটা এখন স্পষ্ট। কর্মীরা আছে বলে, প্রতিষ্ঠান আছে। না হলে কোথায় থাকত প্রতিষ্ঠান? রাজ্য বিদ্যুত্‍ দফতরের দুই সংস্থা, WBSEDCL ও WBSETCL -এর কর্মীদের বকেয়া DA এখনও না মেটানোয় ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। 


অবিলম্বে বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। কর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ডিএ বকেয়া রয়েছে। এ বছরের শুরুতে এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন, সংস্থার কর্মীরা। শুক্রবার ছিল মামলার শুনানি। শুনানি-পর্বে, সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, আমরা বকেয়া মেটানো নিয়ে আগের রায়ের রিভিউ চেয়ে আবেদন জানিয়েছি। ১৪ ডিসেম্বর তার শুনানি।


আরও পড়ুন, কলেজে ২০ কোটি টাকার দুর্নীতি! 'যা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে হয়েছে' মন্তব্য অভিযুক্ত উপাচার্যের


এরই প্রেক্ষিতে, বিচারপতি মান্থা বলেন, রিভিউ পিটিশন করলেই, পুরনো টাকা মেটানোর নির্দেশ কার্যকর করতে হবে না, এমন সুযোগ তৈরি হয় না। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, আগের বকেয়া মেটাতেই হবে। ১৪’র পরিবর্তে, ৬ জানুয়ারি রিভিউ মামলার শুনানি করবে আদালত। তার আগে মেটাতে হবে বকেয়া পুরনো ডিএ’র টাকা। 


এরপর অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশ্যে বিচারপতি আরও বলেন, আমি আপনার বিড়ম্বনা বাড়াতে চাই না। তাই লিখিত ভাবে নতুন অর্ডার দিলাম। সুপ্রিম কোর্ট এই DA মেটানো নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে। নির্দেশ কার্যকর করতে হবে। 


এর উত্তরে, সরকারি আইনজীবী জানান, ৫১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি। তখন বিচারপতি মান্থা ফের বলেন, ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। যদি বিচার ব্যাবস্থায় ভরসা না থাকে, তাহলে অন্য কথা। কিন্তু কর্মীদের বঞ্চিত করা যাবে না। এটা তাদের কষ্টের দাম। কতদিন এই ভাবে বঞ্চিত থাকবে তারা? আগে ১৪ ডিসেম্বর রিভিউ শুনানি ছিল। সেটা পিছিয়ে দিলাম। কিন্তু এর মধ্যে আগের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।



বকেয়া ডিএ’র দাবিতে যখন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বারবার আন্দোলনে নামছেন, তখন DA নিয়ে অন্য একটি মামলায় হাইকোর্টের কড়া পর্যবেক্ষণের পর, ঝাঁঝ আরও বাড়িয়েছে বিরোধীরা। সিপিএম এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "ডিএ-টা হকের দাবি। কেউ দয়া করছেন না। বাবু সরকার চালাচ্ছ। মন্ত্রিগিরি করছ। তোলাবাজি করছ। সরকারি কর্মচারীর ৪ জনের মধ্যে ৩ জন শূন্যপদ। ১ জনের ওপর চাপ সৃষ্টিকরা। কোথায় যাচ্ছে এই টাকা? " 


রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বকেয়া DA পাবেন কবে? এটাই বড় প্রশ্ন।