কলকাতা : গোটা বিশ্বের একটা বড় সংখ্যক মানুষ নিয়মিত মদ্যপান করেন। কিন্তু, অনেকেই জানেন না, মদ-সহ সব ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। অনেকের মধ্যেই এটি সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। কেউ কেউ অ্যালকোহলকে স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী বলেও মনে করে। এমনই বলছে নতুন একটি গবেষণা।
কী বলছে নতুন গবেষণা ?
ইথানল রয়েছে এমন সব পানীয়, যেমন- ওয়াইন, বিয়ার এবং মদ- ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এখনও পর্যন্ত সাত ধরনের ক্যান্সারের সঙ্গে অ্যালকোহলের সংযোগ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে রয়েছে- ব্রেস্ট, মাউথ ও কোলোন ক্যান্সার। "অ্যালকোহল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারের ঝুঁকির একটি অন্যতম কারণ এবং পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে বেশিরভাগ আমেরিকান এটি জানেনই না", এমনই বলছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের ক্যান্সার প্রতিরোধ ফেলো হিসাবে গবেষণার নেতৃত্ব দেওয়া অ্যান্ড্রু সিডেনবার্গ।
দলটি দেখে যে, লিকারের ক্ষেত্রে অ্যালকোহল-ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন ৩১.২ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক, এরপরে রয়েছে বিয়ার (২৪.৯ শতাংশ) এবং ওয়াইন (২০.৩ শতাংশ)। প্রাপ্তবয়স্কদের ১০ শতাংশ বলেছেন, ওয়াইন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে, ২.২ শতাংশ বলেছেন বিয়ার এবং ১.৭ শতাংশ বলেছেন লিকার। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চের একটি জার্নাল ক্যান্সার এপিডেমিওলজি, বায়োমার্কার্স অ্যান্ড প্রিভেনশন-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক জানেন না যে এই পানীয়গুলি কীভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
ওয়াইন সহ সব ধরনের অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। ফলে, অ্যালকোহল ব্যবহারে ক্যান্সারের ঝুঁকি সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে," বলছেন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের Behavioral Research Programme-এর সহযোগী পরিচালক উইলিয়াম এমপি ক্লেইন।
বয়স্করাও ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণ হিসাবে অ্যালকোহল সম্পর্কে কম সচেতন।
প্রসঙ্গত, ভয়াবহতায় প্রায় সব রোগকে ছাপিয়ে গিয়েছে ক্যানসার। চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতিতে কর্কটরোগের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য অনেক কিছু তৈরি হয়েছে ঠিকই, তবে কঠিন এই ব্যাধিকে আটকে দেওয়া বা সারিয়ে তোলার কোনও অব্যর্থ দাওয়াই এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বর্তমান বিশ্বে ক্যান্সার যেভাবে থাবা প্রসারিত করছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে ১ জনের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। অর্থাৎ পরিবারে-পরিবারে ক্যান্সার ঢুকে পড়লেও অবাক হওয়ার কিচ্ছু নেই। তবে যদি এখন আগে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়, তবে কর্কট রোগ শিকড় বিস্তার করার আগেই ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন ; ক্যান্সারের ঝুঁকি কার কতটা আগে থেকে বলা যায়?