শিবাশিস মৌলিক ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Calcutta Medical College Hospital) চিকিত্সার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ। রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বচসা, গন্ডগোলের জেরে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে গন্ডগোল মেটে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
মিনিট ২০-র মধ্যেই সব শেষ: অ্যালার্জির (Allergy) চিকিত্সা করাতে হাসপাতালে আনার মিনিট ২০-র মধ্যেই সব শেষ। রোগীর পরিবারের দাবি, পরপর ২টি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই মৃত্যু হয় তরতাজা যুবকের। চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবারের। মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
বাবুঘাট এলাকার বাসিন্দা, বছর ২৭ এর সাদিক আলির মঙ্গলবার আচমকা অ্যালার্জির সমস্যা হয়। পরিবারের দাবি, চিকিত্সার জন্য তিনি নিজেই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ মোটরবাইক চালিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সঙ্গে ছিলেন বন্ধুরা। পরিবারের দাবি, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখান তিনি। পরিবারের দাবি, রাত ১২টা ৪০-এ তাঁকে ভর্তি করা হয়। সে সময় তেমন অসুস্থতা ছিল না রোগীর।
দ্বিতীয় ইঞ্জেকশন দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু: অভিযোগ, এরপর তাঁকে ২টি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ইঞ্জেকশন দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় যুবকের। মৃতের বন্ধুর কথায় আমরা দেখলাম, ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর বমি করছে। হার্টবিট বেড়ে গেছে। তারপর দ্বিতীয় ইঞ্জেকশন দেয়। কিছুক্ষণ পরই মারা যায়।
পরিবারের অভিযোগ: চিকিত্সায় গাফিলতির কারণে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। মৃতের ভাইয়ের কথায়, 'আমি অন্য ওষুধ দিতে বলি। আমাকে বলে, ডাক্তার হয়ে গেছিস?'
খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন রোগীর আত্মীয়, প্রতিবেশীরা। জুনিয়র চিকিত্সকদের সঙ্গে শুরু হয়ে যায় বচসা। ঘটনাস্থলে আসে বউবাজার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। আসেন স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠক।
পরে পুলিশ ও কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে অশান্তি মেটে। চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জরুরি বিভাগে গন্ডগোল, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মৃতের পরিজনদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বুধবার সকালে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিত্সকদের নিয়ে বৈঠক হয়। পর্যালোচনা করে দেখা যায়, যে চিকিত্সা দেওয়া দরকার ছিল, তা সময় মতো দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রোগীকে বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে আনার ২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয়।