নান্টু পাল, বীরভূম: তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যার আগে প্রস্তুতি তুঙ্গে। মাঝে আর মাত্র একটি দিন। তারপরেই তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যা ( Kaushiki New Moon) । কোভিডে জন্য পর পর দুই বছর কৌশিকী অমাবস্যায় পূর্ণাথীদের জন্য বন্ধ ছিল তারাপীঠ। তাই এই বছর লক্ষাধিক পূর্ণাথীর সমাগম ঘটবে।এই আশঙ্কায় ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য ইতি মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মন্দির কমিটি থেকে জেলা প্রশাসন। ভক্তদের জন্য শুক্রবার ও শনিবার পর পর দুই দিন সারা রাত্রি খোলা থাকবে, মন্দির কমিটি থেকে নেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত।
কৌশিকি অমাবস্যা দিন ভক্তদের ভিড় সামালাতে মন্দির কমিটি থেকে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তারক্ষী।মন্দির চত্বরে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। পুরো মন্দিরচত্বর সিসিটিভি লাগানো কাজ চলছে। মন্দিরেচত্বর লাইট দিয়ে সাজানো হবে।বড় পর্দার মাধ্যমে ভক্তদের আরতি দেখার ব্যবস্থা করা হবে। অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতাধিক সিসিটিভি লাগানো হবে। মোড়ে মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড করা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার, মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। কথিত আছে কৌশিকী আমাবস্যা দিন তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেন সাধক ব্যামাক্ষ্যাপা। তারাপীঠে শ্মশানের শ্বেত শিমূলতলায় সাধনা করেছিলেন সাধক ব্যামাক্ষ্যাপা। দেখা দেন মা তাঁরা। সেই থেকে পালিত হয় কৌশিকি আমাবস্যা। কৌশিকী আমাবস্যায় মাকে রাজবেশে সাজিয়ে পূজো করা হয়। দূরদূরান্তে থেকে আসে সাধু সন্ন্যাসীরা।
আরও পড়ুন, বাঁশদ্রোণীতে প্রাক্তন চেয়ারম্যানের ফ্ল্যাট এবার সিল করল সিবিআই
যদিও গতবছর তৃতীয় ঢেউ-র আশঙ্কায় কৌশিকী আমাবস্যায় বন্ধ ছিল তারাপীঠের মন্দির। একুশ সালে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল মন্দির। ৬ দিন মন্দির বন্ধ থাকলেও মায়ের নিত্যপুজো হয়েছে নিয়ম মেনেই। তারাপীঠে কৌশিকী আমাবস্যা নিয়ে মন্দির কমিটি, হোটেল মালিক, অটো ইউনিয়নদেরকে নিয়ে বৈঠকে করে প্রশাসন।সেখানেই ওই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ আধিকারিক নগেন্দ্র ত্রিপাঠী, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিনহা, তারাময় মুখ্যপাধ্যায় মন্দির কমিটি সভাপতি-সহ আরও অনেকে। করোনার কারণে আগেরবার কৌশিকী অমাবস্যায় পুন্যার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করা হয়। মন্দির কমিটি তারাময় মুখ্যপাধ্যায় বলেন,' প্রতিবছরই বহু মানুষের সমাগম হয় এই দিন। তাই এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ যাতে বৃদ্ধি না পায় সেদিক মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত।' যদিও এবার সেই বাধা আর রইল না। মূলত এবছর আগের থেকে অনেকটাই কমে এসেছে কোভিড সংক্রমণ। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাও অনেকটাই কমেছে। আগের মতো আর সেই ততটা আশঙ্কা নেই। কমেছে মৃত্যুর হারও। তবে কোভিড বিধি মেনেই সর্বত্র যেতে সতর্ক করা হচ্ছে। মাস্ক পরার পাশাপাশি, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথাও মনে করাচ্ছে বারবার প্রশাসন।