কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে তাপস মণ্ডলকে আজ ফের তলব করেছে ইডি। বাড়ি থেকে ইডির দফতরের উদ্দেশ্য়ে রওনা হলেন তাপস মণ্ডল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের নাম সর্বপ্রথম শোনা যায় জেলবন্দি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলের মুখে। এর প্রেক্ষিতে কুন্তলকে তলব করে ৩ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। এরপর আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডির হাতে গ্রেফতার হন কুন্তল। এদিকে তাপস মণ্ডলের বিরুদ্ধে পাল্টা চক্রান্তের অভিযোগে তুলেছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত এই যুব তৃণমূল নেতা। সূত্রের খবর, তাপস মণ্ডল ও ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন ইডির আধিকারিকরা।


এদিন কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে টাকা চাওয়া প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য় করেন তাপস মণ্ডল 'টাকা তো চাইবই, টাকা ওকে দেওয়া হয়েছে, টাকা চাইব না?' । ইডি-র তলবে আজ ফের সিজিও-তে হাজির হয়েছেন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস। এর আগে কুন্তলকে তলব করে ৩ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তারপর আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডির হাতে গ্রেফতার হন কুন্তল। তাপস মণ্ডলের বিরুদ্ধে পাল্টা চক্রান্তের অভিযোগে তুলেছেন কুন্তল তাপস মণ্ডল ও ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে আজ। 


নিয়োগকাণ্ডে আপাতত ইডির জালে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কোটি কোটি টাকা তোলার যে অভিযোগ উঠছে, তা কি কুন্তল একাই তুলেছিলেন? না, টাকা তুলতে এজেন্টও রেখেছিলেন তিনি? এই প্রেক্ষাপটেই সামনে আসছে বেশ কয়েকটি নাম। 


নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সামনে এসেছে তাপস মিশ্রের নাম। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এক নম্বর ব্লকের ভন্ডুবসান গ্রামের বাসিন্দা তাপস। গত বছর ডিসেম্বরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে হাজিরার নোটিস সেঁটে দিয়ে এসেছিল ইডি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করেছে ইডি! কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি,তদন্তে নেমে ৩০ কোটির হিসেব পাওয়া গেছে! টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকারও করেছেন কুন্তল! বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে,চাকরি দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা কি কুন্তল একাই তুলেছেন? টাকা তোলার জন্য কি এজেন্ট রেখেছিলেন কুন্তল? যদি তাই হয়, তবে নিয়োগ দুর্নীতির নেটওয়ার্কে কারা কারা যুক্ত? 


তাপস মণ্ডলের কথায়, তাপস মিশ্র আমার কাছে এসেছিল কয়েকজন ক্যান্ডিডেটের বিষয়ে কথা বলতে। পরে কুন্তল ওকে এজেন্ট করে নিল। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাপস মণ্ডলের মুখে শোনা গিয়েছিল তন্ময় গোস্বামী নামে আরও একজনের নাম। বাঁকুড়ার তালডাংরা বাজারে, ঝাঁ চকচকে, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় মোড়া এই দোতলা বাড়িতেই থাকেন তন্ময় গোস্বামী। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আগে পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ ছিলেন তন্ময়। সূত্রের খবর, তন্ময় গোস্বামী, তাপস মিশ্র এবং গোপাল দলপতি - নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এই ৩ জনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে ইডি।


এই প্রসঙ্গেই সামনে এসেছে গোপাল দলপতির নাম। যা শোনা গিয়েছিল কুন্তলের মুখেই। কে এই গোপাল দলপতি? কীভাবে তিনি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যুক্ত? তারই খোঁজে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থানার কসবা গ্রামে গোপালের বাড়িতে গিয়েছিল এবিপি আনন্দ। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের দাবি, গোপালের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগই নেই। জানা গেছে, চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার হয়ে গোপাল দলপতি এখন তিহাড় জেলে বন্দি।