ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : ক্যানসার। চিকিৎসা বিজ্ঞান যতই এগিয়ে যাক না কেন, ক্যানসার মানে এখনও আতঙ্ক। আতঙ্ক সেরে উঠতে না-পারার। আতঙ্ক ভয়ঙ্কর এই রোগের সঙ্গে যুঝতে গিয়ে ধনে-প্রাণে ভেসে যাওয়ার। কিন্তু যদি সেই মারণরোগকে এবার আটকে দেওয়া যায়? আটকে দেওয়া না গেলেও, সারিয়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিতে চলেছে একটি ভ্যাকসিন। ২০২৫ থেকে। এমনটাই ঘোষণা করেছে রাশিয়া । প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সগর্বে ঘোষণা করেছেন, ক্যানসারের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলেছেন রুশ চিকিৎসা-গবেষকরা। নতুন বছরের গোড়াতেই রাশিয়ায় ক্যানসার রোগীদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে এই ভ্য়াকসিন। রাশিয়ার এই দাবি ঘিরেই আশায় বুক বাঁধছে ভারতও। আগামীদিনে কি ভারতীয়রাও এই ভ্যাকসিন পেতে চলেছেন?
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই প্রতিষেধক তৈরি হয়েছে। প্রতিটি মানুষের শরীরেই রোগ প্রতিরোগব্যবস্থার অবস্থান পরিবর্তিত হয়। এই মেডিসিনকে বলা হয় পার্সোনালাইজড মেডিসিন। কোনও ক্যানসার আক্রান্তকে যদি ওই প্রতিষেধক দেওয়া যায়. তাহলে তার শরীরে ঢুকে সেটা কাজ করবে ও ক্যানসারকে আস্তে আস্তে নষ্ট করে দেবে।
রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনস্থ রেডিয়োলজি মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের জেনারেল ডিরেক্টর আন্দ্রে কাপ্রিনের দাবি, MRNA বা মেসেঞ্জার RNA প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে ক্যানসারের এই প্রতিষেধক। পাশাপাশি, সম্পূর্ণ ভেষজ উপাদান দিয়ে ক্যানসারের এই ভ্যাকসিনটি তৈরি হওয়ায়, এর কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বলে দাবি করেছে রাশিয়া। আপাতত সদ্য আবিষ্কৃত ক্যানসারের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে রাশিয়াজুড়ে।
চিকিৎসক স্বর্ণবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ক্যানসার রোগটির মূল প্রবণতাই হল হল বৃদ্ধি। ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিষেধকটি একটি আগ্রাসী রূপ ধারণ করছে। এটি গবেষণাগারে তৈরি করা MRNA-কেও মারছে, ক্যানসার রোগাক্রান্ত MRNA-কেও মারছে।
কীভাবে কাজ করবে এই প্রতিষেধক? রাশিয়ার চিকিৎসা-গবেষকদের দাবি, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি শরীরে থাকা ক্যানসারের কোষ চিনে নিতে সক্ষম। ফলে থেরাপিউটিক ক্যানসার ভ্যাকসিনটি শরীরে থাকা টিউমার কোষের প্রোটিন বা অ্যান্টিজেনকে টার্গেট করে। তারপর প্রতিষেধকটি শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে রুখে দেয় কোষের অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি।
ক্যানসার বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার জানাচ্ছেন, এতদিন পর্যন্ত যে কোষটা শরীরে ফরেন বডি হওয়া সত্ত্বেও চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না, এবার তা করা যাবে। এবার অ্যান্টিবডি অ্যান্টিজেনটাকে লোকেট করবে এবং মারতে পারবে। সুতরাং মনে রাখতে হবে, এটা প্রিভেন্টিভ ভ্যাকসিন নয়, কিউরেটিভ ভ্যাকসিন। অর্থাৎ এই ভ্যাকসিন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদেরই দেওয়া যাবে, তাতে ক্যানসার সারার সম্ভাবনা বাড়বে। এই ভ্যাকসিন কিন্তু ক্যানসার হওয়া আটকানোর জন্য তৈরি হয়নিয
তবে কি এবা ভয়ঙ্কর ক্যানসারকে মোক্ষম জবাব দিতে তৈরি ভ্যাকসিন? রাশিয়ার ভ্যাকসিন কি ভারতেও আসবে ? ভারতেও কি তৈরি হবে এমন কোনও প্রতিষেধক? প্রশ্ন অনেক, উত্তর দেবে সময়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Bangladesh: 'হাসিনার আমলে পাকিস্তানকে বয়কটের সিদ্ধান্ত বাতিল' বিজ্ঞপ্তি জারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের