শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভ্যাকসিন দেওয়া কেন্দ্র করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ক্যানিং থানার পুলিশ। ক্যানিং মহকুমার হাসপাতালে কোভিডশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। আজ থেকে ফের শুরু হয়েছে টিকাকরণ। সেইমতো সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয়রা। এর পরই জানানো হয় সবাইকে নয়, শুধুমাত্র মহকুমা শাসকের দেওয়া তালিকা অনুযায়ীই টিকা দেওয়া হবে। এর পরই উত্তেজনা ছড়ায়।


বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। মহকুমা শাসকের দেওয়া তালিকা নয়, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা গ্রহীতাদের অগ্রাধিকারের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও হাসপাতাল আধিকারিক পরিমল ডাকুয়া জানান, প্রতিদিন ২০০ জনকে কোভিশিল্ড দেওয়া হবে বলেই সিদ্ধীন্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এদিন অতিরিক্ত মানুষ চলে আসায় সমস্যা হয়। পরে সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে বলেও জানানো হয়েছে হাসপাতালের তরফে। 


শুধু ক্যানিং-এই নয়। ভ্যাকসিন হয়রানির ছবিটা সর্বত্র একই। ১২ অগাস্ট কলকাতার দুটি সরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিন হয়রানির ছবি প্রকাশ্যে আসে। এনআরএসের ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের দাবি, কেউ এসেছেন রাত ৩টেয়, কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভোর ৫টা থেকে। অভিযোগ, পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকায় বাড়ছে হয়রানি। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালের তরফে মাইকে ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে, কলকাতা মেডিক্যালে রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও কুপন মেলেনি বলে অভিযোগ করেছিন ভ্যাকসিন গ্রহীতারা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চায়নি।


দিকে দিকে ভ্যাকসিনের আকাল। চড়া রোদ্দুর কিম্বা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য তৃণমূল-বিজেপি একে অপরের সরকারকে দায়ী করছে। প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার উৎপাদক সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনে রাজ্য সরকারগুলিকে দেয়। তারা সেই ভ্যাকসিন বণ্টন করে। এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এর বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মানুষ গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে ভ্যাকসিন কিনতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফের ভ্যাকসিনের দরবার তৃণমূলের। বাংলায় টিকা পাঠান, বৈঠকে মোদির কাছে আর্জি জানিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী, দাবি তৃণমূল সাংসদের।


শূন্য থেকে ১২ বছর বয়সীদের মায়েদের দেওয়া হচ্ছে ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন দেওয়াকে কেন্দ্র করেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। মায়েদের দাবি, প্রতিদিন কতজনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তা নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু না জানানোয় এই হয়রানি। লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েও ভ্যাকসিন না নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। বাড়িতে ছোট ছোট সন্তানদের রেখে আসায় সাংসারিক সমস্যাও হচ্ছে বলে ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের অভিযোগ। পাড়া অথবা বাড়িতে গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার আবেদন জানান তাঁরা। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।