প্রকাশ সিন্হা, দীপক ঘোষ ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : বালিগঞ্জে জিতেছেন প্রায় এক-মাস হতে চলল। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়র শপথগ্রহণ নিয়ে টানাপোড়েন এখনও চলছে। আর এরই মধ্যে রাজনৈতিক তরজার আবহে নতুন বিতর্ক! প্রায় ৫ বছর আগে সরকারি টেন্ডার-দুর্নীতির মামলায় জড়াল মোদি মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo) তৎকালীন আপ্ত সহায়ক সুশান্ত মল্লিকের নাম।
CBI’এর দায়ের করা FIR-এ কী অভিযোগ
দিল্লিতে CBI’এর দুর্নীতি দমন শাখায় এই নিয়ে FIR’ও দায়ের হয়েছে। ইপিআইএল দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই-এর প্রাথমিক দাবি, ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়, তার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা যায় সুশান্তর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। CBI’এর FIR’এ ৪ নম্বরে নাম আছে বাবুল সুপ্রিয়র প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক সুশান্ত মল্লিকের। গত শনিবার CBI’এর দায়ের করা FIR-এর কপিতে দাবি করা হয়েছে, ঠিকাদার আশুতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে যত টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়, সুশান্ত মল্লিকের (Sushanta Mallick )ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
২০১৬-র ডিসেম্বরে আশুতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুশান্ত মল্লিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছিলেন। CBI’এর FIR’এ দুর্নীতির যে সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেই সময় অর্থাৎ ২০১৬ সালে বাবুল সুপ্রিয় ছিলেন কেন্দ্রীয় ভারী শিল্পপ্রতিমন্ত্রী।তার ২ বছর আগে প্রথমবার আসানসোলের বিজেপি সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
যে সংস্থায় টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তার নাম ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্টস ইন্ডিয়া লিমিটেড বা EPIL। সংস্থার ওয়েবসাইট বলছে, ১৯৭০ সালে এই সংস্থাকে ভারী শিল্পমন্ত্রকের অধীনে আনা হয়। সিবিআই সূত্রের খবর, কয়েকমাস আগেই, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্টস ইন্ডিয়া লিমিটেডে ঘুষ নিয়ে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে।
অভিযোগ, EPI’তে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে মোট ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছিল। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোট ৭ জনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে তদন্ত। যার মধ্যে EPI’এর তৎকালীন ৩ আধিকারিকের নাম আছে। আর নাম আছে সুশান্ত মল্লিকের। যিনি সেই সময় ওই মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র আপ্ত সহায়ক ছিলেন।
বাবুলের প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে এবিপি আনন্দ যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ' ২০১৬-র কেস লঞ্চ হল ২০২১-এ। ২০২২-এ তার চার্জশিট ! সুশান্ত আমার আপ্ত সহায়ক ছিলেন । প্রিয়রঞ্জন, নীতীশের সঙ্গে কাজ করেছেন, । আসলে জনৈক এমএলএ হাতে পায়ে ধরছেন, আমার নাম দেওয়ার জন্য। ওরা যা করছে করুক, আমার কী বলার থাকতে পারে। '
বাবুলের ফলা কোন বিধায়কের দিকে তা স্পষ্ট না করলেও
শুরু রজনীতির তরজা
এই ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ফের কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ' বাবুল বিজেপি ছেড়েছিলেন, বিজেপি রুষ্ট, তার জন্যই এটা হচ্ছে কি না দেখতে হবে'
রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জবাবে বলেন , এই মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত করছে সিবিআই।