প্রকাশন সিনহা, সন্দেশখালি : ইডির ওপর হামলার ঘটনার তদন্তে ফের সন্দেশখালিতে CBI। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় গেলেন CBI-এর চার তদন্তকারী। সরবেড়িয়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল ED। এই মামলায় আগেই শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিবিআইয়ের তরফে একাধিক তথ্য আদালতে পেশ করা হয়। শেখ শাহজাহানের কোথায় কী সম্পত্তি ছিল তার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, আরও কয়েকটি অভিযোগ নতুন করে সিবিআই দফতরে পৌঁছেছিল। সেই অভিযোগের সত্যতা বিচার করতেই আজ সিবিআই আধিকারিকরা ফের সন্দেশখালিতে পৌঁছে গেছেন। বাসিন্দাদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে বর্বরোচিত আক্রমণের মুখে পড়েছিল ED ও CRPF। রক্তাক্ত হন ইডির আধিকারিকরা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষের শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। আর সেখানে ইডি-কে রুখতে ভয়ঙ্কর রোষে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর অনুগামীরা। প্রায় প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করেন ইডি অফিসাররা। আর তখনই যাবতীয় রাগ উগরে দেওয়া হয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর।
তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে বারবার ডাকাডাকি সত্ত্বে সাড়া মেলেনি কারও। এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী তালা ভাঙার চেষ্টা করতেই তৈরি হয় বিপত্তি। শ'য়ে শ'য়ে শাহজাহান-অনুগামী বাড়ির সামনে জড়ো হয়। বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখায় তারা। তারপরই খবর করতে গেলে এবিপি আনন্দর চিত্র সাংবাদিক সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে বেধড়ক মারধর করা হয়, ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা। কেড়ে নেওয়া হয় লাইভ সম্প্রচারের সরঞ্জাম। ছিনতাই করে নেওয়া হয় এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি সন্দীপ সরকারের মোবাইল ফোন। জানতে চাওয়া হয় ফোনের পাসওয়ার্ড। তা জানাতে না চাইলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয়। তারপর পাসওয়ার্ড বলতে হয়। এরপর তাঁদের মারতে মারতে গ্রামের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কোনওরকমে প্রাণ হাতে নিয়ে দৌড় দিতে হয় সাংবাদিকদের। গাড়ির চালককেও মারধর করা হয়। ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় এবিপি আনন্দর গাড়ি। আক্রান্ত হয় অন্যান্য সংবাদমাধ্যমও। অন্য একটি সংবাদমাধ্যমের গাড়ির ড্রাইভারকে বেধড়ক মেরে মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে।