নদিয়া : নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ( recruitment scam ) এবার সিবিআইয়ের ( CBI ) স্ক্য়ানারে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ( Tapas Saha ) ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকার ( Iti Sarkar ) । নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বাড়িতে শুক্রবার থেকে টানা সাড়ে ১৪ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। তারপর শনিবার সকালে তেহট্টের বয়ারবাঁধায় বিধায়কের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের ( Prabir Kayal ) বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এরপর তাঁরা পৌঁছে যান ইতির বাড়ি।
বিধায়কের প্রাক্তন আপ্ত সহায়কের পর এদিন ইতির বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তে একাধিকবার উঠে এসেছে তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকারের নাম। সিবিআইয়ের দাবি, ইতি একাই ১৩টি সরকারি স্কুলে ইউনিফর্ম বিলির বরাত পান, একইসঙ্গে ওই স্কুলগুলিতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণও দিতেন ইতি। তাপস সাহার ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূল নেত্রী ইতি সরকারকে সরকারি স্কুলে কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ইতি বলেন, '২০১৯ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলে ইউনিফর্ম
সরবরাহ করি। একুশের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার পর তাপস সাহার সঙ্গে পরিচয় হয়। উনি আমার কাকু, বাবার মতো। আমি একসময় ব্লকের নেত্রী ছিলাম, এখন কৃষ্ণনগরের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। তাপস সাহার বাড়িতে সিবিআই হানার নেপথ্যে দলের একাংশের ষড়যন্ত্র থাকতেও পারে। আমি প্রবীর কয়াল বা এদের কাউকে চিনি না। এখন ছবি দেখে জানতে পারছি। ' নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই হানার পর এবিপি আনন্দ-কে প্রতিক্রিয়া জানালেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ঘনিষ্ঠ নেত্রী ইতি সরকার।
আরও পড়ুন :
দলের প্রতি অভিমানী বিধায়ক তাপস সাহার জন্য কী বললেন ফিরহাদ ?
এছাড়াও শনিবার বয়ারবাঁধায় প্রবীরের বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। শুক্রবার প্রবীরের হাওড়ার শ্যামপুরের কাঁঠানলি গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালানোর পাশাপাশি, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করে সিবিআই। প্রবীর দাবি করেন, চাকরি-বিক্রির টাকায় কমিশন হিসেবে তাঁকে তেহট্টে বাড়ি বানিয়ে দেন তৃণমূল বিধায়ক। সেই সূত্র ধরেই আজ তেহট্টের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই।
এই প্রবীরের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে তাঁর প্রতিবেশীরাও। তাঁদের কথায় 'হঠাৎই বড়লোক হয়ে গিয়েছিলেন প্রবীর কয়াল। জমি কিনে রাতারাতি বাড়ি তৈরি করেছিলেন। পরে জানা যায়, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন প্রবীর। লকডাউনের সময় চাকরিপ্রার্থীরা হানা দেওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়। প্রবীরের তেহট্টের বাড়িতে প্রভাবশালীরা আসতেন। বিধায়ক তাপস সাহারও যাতায়াত ছিল। চুনোপুঁটিদের সঙ্গে মিশতেন প্রবীর। তাঁর বাড়িতে বসত খাওয়াদাওয়ার আসর। এমনই জানিয়েছেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালের প্রতিবেশীরা।