বোলপুর: ভিড় ঠেলে দরজা দিয়ে বার করে আনা হয়েছিল তাঁকে। বীরভূমে (Birbhum) তৃণমূল (TMC) সভাপতির এহেন গ্রেফতারি ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সেই সময়। তার এক সপ্তাহ পর ফের বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal)বাড়িতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। অনুব্রত-কন্যা সুকন্যার নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে খবর। সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতেই সুকন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা জানা যায়। এক মহিলা আধিকারিক-সহ সিবিআই গোয়েন্দারা অনুব্রতর বাড়িতে ঢোকেন গোয়েন্দারা। কিন্তু মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই এদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা। এত কম সময়ে কেন বেরিয়ে এলেন গোয়েন্দারা, সুকন্যা কি জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে চাননি, উঠছে প্রশ্ন।
অনুব্রতর বাড়িতে ঢুকে ১০ মিনিটেই বেরিয়ে এলেন গোয়েন্দারা
বুধবার পূর্ব পল্লিতে সিবিআই-এর শিবিরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অনুব্রতর অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিকে। প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ডাকা হয় ব্যাঙ্কের আধিকারিকদেরও। সেখানে সিবিআই-এর হাতে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে বলে খবর। তার পরই সেখান থেকে বেরিয়ে সটান অনুব্রতর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় সিবিআই। মাঝপথে ফের গাড়ি ফিরেও যায় শিবিরে। ফেলে যাওয়া কিছু নথি সংগ্রহ করে সিবিআই। তার পর ফের রওনা দেয় তাদের গাড়ি। তার আগেই অনুব্রতর বাড়ি পৌঁছে যান তাঁর আইনজীবী। জিজ্ঞাসাবাদের আগে তিনি সুকন্যাকে পরামর্শ দিতে যান বলে খবর। তার পর পৌঁছয় সিবিআই। কিন্তু ১০ মিনিটেই বেরিয়ে আসে তারা।
গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত। সিবিআই-এর নজরে তাঁর মেয়ে সুকন্যার নামে থাকা সম্পত্তির উপরও। সিবিআই সূত্রে দাবি, সুকন্যার নামে বোলপুরে কেনা হয়েছে জমি, চালকল-সহ একাধিক সম্পত্তি। বেনামে কোম্পানিও খোলা হয়েছে, যার শেয়ার ভ্যালু কোটি টাকা। সিবিআই সূত্রে দাবি, কয়েক বছর আগে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পাওয়া সুকন্যার আয়ের সঙ্গে তাঁর নামে থাকা সম্পত্তি সঙ্গতিহীন। তাই বিশদে তথ্য জানতে চান গোয়েন্দারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত-কন্যার নামে এখনও পর্যন্ত বোলপুরেই দশটি সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। এর প্রায় প্রতিটিই ২০১৪ থেকে ২০১৬-র মধ্যে কেনা হয়েছে। এ ছাড়াও, সুকন্যার নামে দ্বিতীয় কোম্পানির হদিশ মিলেছে বলে সিবিআই (CBI) সূত্রে দাবি। নীড় ডেভেলপার প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি তৈরি হয়েছিল ২০০৬ সালে, যার শেয়ার ক্যাপিটাল ছিল দেড় কোটি টাকা। নথি যদি সঠিক হয়, সে ক্ষেত্রে সেই সময় সুকন্যার প্রাপ্তবয়স্ক হননি। তাহলে তাঁর নামে সংস্থা হল কী করে, তা জানতে চায় সিবিআই। ANM অ্যাগ্রোকেম ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের ঠিকানাতেই তৈরি হয় এই রিয়েল এস্টেট কোম্পানি।
কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে বলে সূত্রের খবর
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সংস্থার দুই ডিরেক্টর অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal) ও অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ গায়েন। বোলপুরের কালিকাপুরের হারাধন মণ্ডল রোডে একই ঠিকানায় কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে ভোলে ব্যোম রাইস মিলেরও। অর্থাৎ একই ঠিকানায় রয়েছে তিন-তিনটি কোম্পানি। পেশায় স্কুলশিক্ষিকা অনুব্রত-কন্যার নামে এত সম্পত্তি কীভাবে হল, সেটাই জানতে চান সিবিআই আধিকারিকরা। গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের নজরে রয়েছেন অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ, বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎবরণ গায়েনও।