কালিয়াচক: মালদার কালিয়াচকে নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন ও খুনের অভিযোগের ঘটনায়, আজ নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের। তার আগেই সেখানে পৌঁছে গেল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধি দল। 


উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের পর এবার মালদার কালিয়াচক। ফের কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। কালিয়াচকের ঘটনাতেও  সিবিআই তদন্ত দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী। 


নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ঘিরে অগ্নিগর্ভ উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ। মালদার কালিয়াচকে কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতেও উঠল একই অভিযোগ। 


শুধু তাই নয়। কালিয়াগঞ্জের মতো কালিয়াচকে নাবালিকার মৃত্যুতেও উঠল CBI তদন্তের দাবি। যা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি বারবার কেন এই অনাস্থা?


মৃত কিশোরীর পরিবার মঙ্গলবার প্রথমে খুনের অভিযোগ করলেও, পরে কালিয়াচক থানায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। মৃতার পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 


এই ঘটনায় মূল এবং একমাত্র অভিযুক্ত হিসেবে কালিয়াচকের উজিরপুরেরই এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম বিশ্বজিৎ মণ্ডল। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে যে চাষের জমি থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়, সেখান থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অভিযুক্তর বাড়ি। 


মৃত দশম শ্রেণির ছাত্রীর বাড়ি মালদা থানা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে দাবি, সোশাল মিডিয়ায় বিশ্বজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল নাবালিকার। দু'জনের আলাপ গড়িয়েছিল ফোনে। সোমবার কিশোরীকে ফোন করে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। বিশ্বজিৎ মণ্ডল বিবাহিত এবং দুই সন্তানের বাবা। 


পুলিশ সূত্রে দাবি, তাকে বিয়ে করতে হবে জানিয়ে বিশ্বজিৎকে চাপ দেয় কিশোরী। তাতে রেগে গিয়ে, কিশোরীর ওড়না দিয়েই তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বিশ্বজিৎ। তারপর ঘটনাস্থল ছেড়ে বাড়ি ফিরেন যান তিনি।  পুলিশ সূত্রে দাবি, মৃত নাবালিকার ফোনের সূত্র ধরেই অভিযুক্তের সন্ধান মিলেছে। কালিয়াগঞ্জকাণ্ডে পুলিশি তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করেছে মৃতার পরিবার। 


কিছুদিন আগে কালিয়াগঞ্জে ফের সংঘাতে জড়ায় জাতীয় এবং রাজ্য় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। নাবালিকার ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় একদিকে জাতীয় কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় রাজ্য়ের কমিশন। পাল্টা আবার নাম না করে সুর চড়িয়েছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনও।  


জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন এবং রাজ্য় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। দুই কমিশনেরই কাজ শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত রাখা। কিন্তু একের পর এক ঘটনায়, দেখা যাচ্ছে বারবার সংঘাতে জড়াচ্ছে তারা। বারবার উঠে আসছে রাজনীতি! কলকাতার তিলজলা মালদার গাজলের পর উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জেও দেখা যায় একই ছবি। 


নাবালিকার ধর্ষণ, খুনের অভিযোগ ঘিরে, চারদিন ধরে উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ। রবিবার সেই নাবালিকার বাড়িতে যান জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো।  


সেইসময়ই রাজ্য় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের তরফে একের পর এক ট্য়ুইটে জাতীয় কমিশনের সমালোচনা করা হয়। 


ট্যুইটে লেখা হয়...শিশু অধিকার রক্ষার কারিগররাই শিশুদের মৃতদেহের সঙ্গে বাংলায় রাজনীতি করছে! লজ্জাজনক NCPCR! উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাকে বদনাম করার লক্ষ্যে, রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের অস্তিত্ব এড়িয়ে, CPCR আইন লঙ্ঘন করে, বেআইনিভাবে রাজ্যে এসেছে NCPCR টিম। প্রিয়াঙ্ক কানুনগো রাজ্যে মহিলা ও শিশুদের নিয়ে যে ধরণের মন্তব্য করছেন তা দুঃখজনক। সত্য যাচাই না করে তিনি প্ররোচনামূলক বক্তব্য রাখছেন। 


পাল্টা নাম না করে, রাজ্য় কমিশনকে তীব্র কটাক্ষ করেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্য়ানও।