কলকাতা: পরপর মৃত্যু, বাড়ছে আক্রান্ত। ডেঙ্গি (Dengue) নিয়ে সতর্ক হতে রাজ্যকে চিঠি কেন্দ্রের (Central)। তথ্য গোপনের অভিযোগে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ বিজেপির (BJP)।
বেশ কয়েকদিন ধরেই ডেঙ্গি আক্রান্তের পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্ক দানা বাধল। অভিযোগ, ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য গোপনের করছে রাজ্য সরকার। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারকে ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্যও সরবরাহ করছে না নবান্ন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। আর এরই মাঝে এদিন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৩ বছরের এক কিশোরীর।
বাড়ছে ডেঙ্গি, চড়ছে উদ্বেগ, ছুটছে প্রশাসন, পুজোর মুখে বাংলায় ডেঙ্গি কতটা বাড়ল? কতজন আক্রান্ত হলেন ? কতজনেরই বা মৃত্যু হল, এই নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই, ডেঙ্গি পরিসংখ্যান নিয়ে ফের বাধল বিতর্ক! ফের অভিযোগ উঠল, ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য গোপনের করছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারকে ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করছে না নবান্ন।
সামনে পুজো, এমন সময় বাংলা জুড়ে দাপট বেড়েছে ডেঙ্গির! সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে পৌঁছতে না পৌঁছতেই, রাজ্যের মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার পেরিয়ে গেছে। গত ৭ দিনে রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৬৭০ জন।
সরকারি মতে, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের! কিন্তু, বেসরকারি সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা ৪৩! এরইমধ্যে শনিবার ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ১৩ বছরের এক কিশোরীর। যাদবপুরের বাসিন্দা এই কিশোরীকে এদিনই ভর্তি করা হয়েছিল এমআর বাঙুর হাসপাতালে। কলকাতা থেকে জেলা - রাজ্যের প্রায় সর্বত্রই ডেঙ্গির প্রকোপের কথা শোনা যাচ্ছে। নিত্য আসছে মৃত্যুসংবাদ! কিন্তু, সেই সংখ্যার খোঁজ মিলছে না কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মশাবাহিত রোগের তথ্য সম্বলিত ওয়েবসাইটে।
চিকিৎসক মহলের একাংশের প্রশ্ন সঠিক পরিসংখ্যান যদি কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটে প্রতিফলিত হত, তাহলেই কি ডেঙ্গি প্রকোপের নিরিখে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে চলে আসত বাংলা? সেটাই কি আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে?
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মশাবাহিত রোগের তথ্য সম্বলিত এই ওয়েবপেজে ৩০ নম্বর ঘরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরে বাংলার কোনও ডেঙ্গির পরিসংখ্যানই সেখানে নেই , এখানেই অভিযোগ উঠছে যে, বাংলা থেকে ডেঙ্গি সংক্রান্ত কোনও তথ্যই পাঠানো হয়নি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য়মন্ত্রকে।
তাই এই ওয়েবসাইটে বাংলার ঘরে নট রিসিভড বা সংক্ষেপে NR বলে উল্লেখ রয়েছে। এর আগেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মশাবাহিত রোগের তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মশাবাহিত রোগের তথ্য সম্বলিত এই পেজেই দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালেও রাজ্যের কোনও ডেঙ্গি পরিসংখ্যান দেওয়া নেই।
বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের একাংশের মতে, সঠিক পরিসংখ্যান চেপে দেওয়ার জেরেই ডেঙ্গি প্রতিরোধে সদর্থক পদক্ষেপ থেকে পিছিয়ে পড়ছে প্রশাসন। স্বাভাবিকভাবেই পুজোর মুখে ডেঙ্গি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতেই, এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাজ্য প্রশাসন-কে নিশানা করতে শুরু করেছে বিরোধীরা।