কলকাতা: কাজের ক্ষেত্রে এখনও সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি। কিন্তু দু’পক্ষের রসায়ন নিয়ে জল্পনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। তার মধ্যেই এ বার কিন্তু ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) সংস্থা আইপ্যাকের (I-PAC) সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সংঘাত প্রকাশ্যে এসে পড়ল। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের (Chandrima Bhattacharya) দাবি নস্যাৎ করল তারা। ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ দাবির সমর্থনে নেটমাধ্যমে চন্দ্রিমার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট সামনে আসে। তা নিয়ে শোরগোল শুরু হলে চন্দ্রিমা জানান, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ওই পোস্ট দিয়েছে আইপ্যাক। কিন্তু তার পাল্টা আইপ্যাক সাফ জানিয়ে দিল যে, তৃণমূলের কারও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট তারা নিয়ন্ত্রণ করে না।





সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তৃণমূলে 'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতির সপক্ষে সওয়াল করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর এই অবস্থানে সমর্থন জানিয়ে নেটমাধ্যমে এগিয়ে আসেন দলের তরুণ প্রজন্মের নেতা-নেতানেত্রীরাও। চন্দ্রিমার অ্যাকাউন্ট থেকেও অভিষেকের অবস্থানকে সমর্থন জানানো হয়। তাতেই শোরগোল পড়ে যায়। দলের অভিজ্ঞ নেত্রী চন্দ্রিমাও অভিষেককে সমর্থন করছেন বলে দাবি ওঠে। ফলে দলে ফের মমতাপন্থী এবং অভিষেকপন্থীদের মধ্যে বিভাজন ঘিরে জল্পনা চরমে ওঠে।


এমন পরিস্থিতিতে এবিপি আনন্দ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চন্দ্রিমা ওই পোস্ট লেখার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, "এটা আমার পোস্ট নয়। এই পোস্ট তৈরি করেছে আইপ্যাক। আমার সম্মতি না নিয়েই এই পোস্ট করেছে ওরা।"


এর পরই আইপ্যাকের তরফে টুইটারে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'তৃণমূল এবং দলের কোনও নেতা-নেত্রীর ডিজিটাল সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণ করে না আইপ্যাক। এমন দাবি যদি কেউ করেন, হয় তিনি বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না, নয়ত পুরোপুরি মিথ্যা বলছেন। সত্যি সত্যিই যদি দলের নেতা-নেত্রীদের সোশ্যাল ডিজিটাল সম্পত্তির অপব্য়বহার হয়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত তৃণমূলের।" আইপ্যাকের বিবৃতির পর যদিও চন্দ্রিমা জানান, তাঁর কাছে খবর এসেছিল যে আইপ্যাকের কথাতেই ওই পোস্ট দেওয়া হয়েছিল।


আরও পড়ুন: 'আমাদের দলের নীতি এক ব্যক্তি এক পদ, সেগুলো নিশ্চই মানা হবে', ফের উল্টো সুর মদনের


একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলের অন্দরে যে বিভাজন তৈরি হয়েছে, সাম্প্রতিক কালে তা ক্রমশ প্রকট থেকে প্রকটতর হয়েছে। দলের একাংশ যেমন প্রকাশ্যে অভিষেকের নেতৃত্ব মানতে অস্বীকার করেছেন, তেমনই অন্য একটি অংশ আবার প্রকাশ্যেই অভিষেকের পক্ষ নিয়েছেন। 'এক ব্য়ক্তি, এক পদ' নীতির ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। 


তৃতীয় বার ক্ষমতা দখলের পরই 'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতির সপক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বকে। কিন্তু কলকাতা পুরভোটে ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমার-সহ একাধিক মন্ত্রী-বিধায়কদের প্রার্থী করায় আপত্তি উঠতে শুরু করে। অভিষেকের সাম্প্রতিক মন্তব্যে সেই বিতর্কই জোর পেয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।