ব্রতদীপ ভট্টাচার্য ও সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : শিলান্য়াসের ১২ বছরেরও বেশি সময় পর চালু হল জোকা-তারাতলা মেট্রো পরিষেবা (Joka Taratala Metro Service)। মা মারা যাওয়ায় কলকাতায় না এসে গুজরাত থেকেই ভার্চুয়ালি মেট্রো পরিষেবার সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিলেন এই প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল তাঁর উদ্যোগেই।
শুরু বহু প্রতীক্ষিত মেট্রো পরিষেবা
নতুন বছর শুরুর ঠিক মুখে নিউ ইয়ার গিফট পেল বাংলা। চালু হল বহু প্রতীক্ষিত জোকা-তারাতলা মেট্রো পরিষেবা। কলকাতায় এসে হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Howrah New Jalpaiguri Vande Bharat Express) সঙ্গেই জোকা-তারাতলা মেট্রো পরিষেবা সূচনা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু মা মারা যাওয়ায়, নরেন্দ্র মোদির কলকাতা সফর বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়ালি মেট্রো পরিষেবার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথম পর্যায়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার যাত্রাপথে মেট্রো পরিষেবা চালু হল। জোকা-তারাতলা রুটে রয়েছে ৬টি স্টেশন। জোকা, ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা। এই রুটে সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ২০ টাকা।
'৫ হাজার কোটি খরচ'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি জোকা-তারাতলা মেট্রো পরিষেবা উদ্বোধনের সময় বলেন, 'প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জোকা-তারাতলা রুট তৈরি। এর ফলে শহরের লোকের ইজ অফ লিভিং আরও বাড়বে।' রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, 'সরকার বড় সওগাত দিয়েছে বাংলাকে। জোরা-তারাতলা মেট্রো দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। উপকৃত হবেন শহরবাসী।'
ফিরে দেখা জোকা-তারাতলা মেট্রো
২০১০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জোকা-বিবাদি বাগ মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস করেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল। তখন রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পরে প্রকল্পটি জোকা-ধর্মতলা করা হয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সূচনালগ্নে সেই প্রসঙ্গ উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। হাওড়া স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন, তাঁর উদ্যোগেই শুরু হয়েছিল এই মেট্রো প্রকল্প।
'সবচেয়ে আনন্দের দিন'
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আপনি জানলে খুশি হবেন আজ আমার সবচেয়ে আনন্দের দিন। কারণ এটা আমার স্বপ্নের প্রকল্প। আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের সঙ্গে জোকা-তারাতলা মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলাম। আজ আমি অবশ্যই ধন্যবাদ জানাব কলকাতা পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান শোভন চট্টোপাধ্যায়কে যিনি জোকা ও তারাতলা মেট্রো স্টেশনের জন্য সমস্ত জমি সংগ্রহ করেছিলেন। ধন্যবাদ তৎকালীন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও।'
শুক্রবার আনুষ্ঠানিক সূচনা হলেও, জোকা-তারাতলা রুটে বাণিজ্যিক ভাবে মেট্রো পরিষেবা শুরু হতে পারে ২ জানুয়ারি থেকে। মেট্রোরেল সূত্রে খবর, মাঝেরহাট থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত বাকি অংশের কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। খুব শিগগিরই তা চালু হয়ে যাবে।