সুমন ঘড়াই, কলকাতা: রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরাতে চায় রাজ্য সরকার। সেই পদে মুখ্যমন্ত্রীকে আনতে চাওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীই হবেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, এই নিয়ে প্রস্তাব পাশ রাজ্য মন্ত্রিসভায়।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, 'রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। আজকে রাজ্যের মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করতে চেয়ে বিধানসভায় বিল (Bill) আনছে সরকার। রাজ্যপাল অনুমতি না দিলে অর্ডিন্যান্স জারি করবে সরকার, খবর সূত্রের।
বিরোধীদের কটাক্ষ:
বিজেপি (BJP) নেতা শমীক ভট্টাচার্যের তোপ, 'একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ এই সরকার। নজর ঘোরানোর জন্য এমন পদক্ষেপ। সাংবিধানিক পদকে এঁরা মানেন না।'
এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম (CPIM) নেতা সুজন চক্রবর্তীও। রাজ্য মন্ত্রিসভার এমন সিদ্ধান্তে কটাক্ষ বিরোধীদের। দলতন্ত্র কায়েম করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে তোপ বিজেপির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আচার্য পদে বসানোর সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছেন বামেরাও।
কী ভাবছেন শিক্ষাবিদরা:
এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে শিক্ষাবিদদের মধ্যে থেকে। শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, 'ভাল ভাবেই দেখছি বিষয়টিকে। এতদিন ধরে যিনি রয়েছেন পদে, সেই জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) জন্যই এমনটি হল। যেখানেই অবিজেপি সরকার রয়েছে, সেখানেই এমনটা হচ্ছে।' শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হন তাহলে আরও সাহায্য করতে পারবেন। আবার উল্টোদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নিয়ন্ত্রণের ঘটনাও ঘটতে পারবেন। মন্ত্রিসভা যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তখন তো আর নড়চড় হওয়ার উপায় নেই।'
শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান। তিনি অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। ইংরেজ আমল থেকে এই প্রথা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি (University) তাদের স্বাতন্ত্র্য হারাবে, শিক্ষায় স্বাতন্ত্র্য আর কিছু থাকবে না। এইভাবে শিক্ষায় (Education) রাজনীতির প্রত্যক্ষ অনুপ্রবেশ ঘটবে। তাতে শিক্ষার সর্বনাশ হবে।'
আরও পড়ুন: 'এখনও আটকে হাওড়া বিল', অধ্যক্ষের কড়া সমালোচনার মুখে রাজ্যপাল