অলোক সাঁতরা, পশ্চিম মেদিনীপুর: সেই জ্বর... সঙ্গে শ্বাসকষ্ট... ! আর এই সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসছে সদ্যোজাত থেকে ১০-১২ বছর বয়সীরা। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুদের আউটডোরে লম্বা লাইন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ১৫ দিনে এই সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৪০ জন শিশু।
শিশুদের অসুখ যখন ভাবাচ্ছে, তখন, এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ওষুধের সঙ্কট! হাসপাতালের চিকিত্সকদের একাংশের মুখেই শোনা যাচ্ছে উদ্বেগের কথা।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ দিব্যজ্যোতি দে জানালেন, ' এভাবে ওষুধের সংকট হওয়ায় রীতিমতো চিকিত্সা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই শিশুরা সুস্থ হতে লেগে যাচ্ছে অনেকটা সময়। যাতে বাজারে অতি শীঘ্র এই সমস্যার সমাধান করা যায় সেদিকে স্বাস্থ্য দফতরকে নজর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।'
এই উদ্বেগের খবরে, আতঙ্কিত শিশুর মা-বাবারাও। শিশুর অভিভাবক উত্তমকুমার দে জানান, শিশুদের ওষুধের আকাল নিয়ে আতঙ্কের কথা বলেছে।
যদিও দ্রুত এই সঙ্কট কেটে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (পশ্চিম মেদিনীপুর শাখা) সম্পাদক কল্লোল কুইলা জানান, পুজোর মরসুমে ওষুধের প্রোডাকশন ও সাপ্লাই কম থাকার কারণেই এই সংকট তৈরি হয়েছে। শিগগিরই এই সংকট কেটে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বিসিডিএর এই সদস্য।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, খুব দ্রুতই সঙ্কট কেটে যাবে।
করোনা না কি স্ক্রাব টাইফাস? নাকি ইনফ্লুয়েঞ্জা? উপসর্গ দেখে বোঝার উপায়ই নেই কী ধরনের জ্বর। আর তাতেই বাড়ছে জটিলতা, বিভ্রান্তি। শিশুদের মধ্যে হু হু করে বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেকক্ষেত্রে জ্বর ফুসফুসকে সংক্রমিত করছে। হচ্ছে নিউমোনিয়া। বাড়ছে এমসেফ্যালোপ্যাথি। অর্থাৎ সংক্রমণ মাথায় চলে যাচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ভয়াবহ।
আক্রান্ত শিশুদের পরিস্থিতি হয়ে উঠছে ভয়ঙ্কর। চিকিৎসকরা তাই বারবার বলছেন, জ্বর হলে ফেলে না রেখে, দ্রুত শিশুকে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যেতে। ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ-এর পিআইসিইউ ইনচার্জ প্রভাসপ্রসূণ গিরি জানালেন, ' জ্বর অনেকের হচ্ছে। মুশকিল হল, এই জ্বরের উপসর্গ একেবারে করোনার মতো। বাবা- মায়েরা বুঝে উঠতে পারছেন না। স্ক্রাব টাইফাস, ইনফ্লুয়েঞজা, সব ক্ষেত্রেই এক উপসর্গ। তাই চিকিত্সা শুরুতে দেরি হচ্ছে। এর ফলেই বাড়ছে সমস্যা'