নয়া দিল্লি: ব্রিটিশদের শাসন থেকে মুক্তি পেতে তখন শেষ লড়াই জারি রাখছিল ভারত। আর ঠিক সেই সময় পড়শি দেশ পাকিস্তান হিংসা এবং সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল এমনটাই জানিয়েছে একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন। ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট স্বাধীনতা পায় পাকিস্তান। আর ১৯৪৮ সালের ২২ অক্টোবর সন্ত্রাসবাদের জন্য পরিচিত দেশ হিসেবে নতুন করে জন্ম হয়। সোমবার আল আরাবিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সেই দিনই কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পদক্ষেপকে প্রতারণামূলকও আখ্যা দেওয়া হয়েছে ওই সম্পাদকীয়তে। কাশ্মীরের নিরীহ পুরুষ, নারী ও শিশুদের ওপর একটি বর্বর অভিযান চালিয়েছিল পাকিস্তান, এমনটাও বলা হয়। কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পাকিস্তানের পাঠানো সশস্ত্র আক্রমণকারীদের আক্রমণ এতটাই বিধ্বংসী ছিল যে ৭২ বছর পেরিয়েও আজও ওই দিনটিকে ইতিহাসে 'কালো দিন' হিসেবে স্মরণ করা হয়, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী পাকিস্তানি সেনা বেসামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই অপারেশন চালায় বলে মন্তব্য করা হয়। আল আরাবিয়ার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, "অপারেশন গুলমার্গ" ছিল পরিকল্পনার কোডনেম এবং এটিতে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ স্বাক্ষর করেছিলেন। এর লক্ষ্য ছিল "কাশ্মীরিদের গণহত্যা" চালানো। এডিটোরিয়ালে বলা হয়েছে, ট্রাইবাল এলাকা থেকে পশতুন পুরুষদের তুলে নিয়ে তাঁদের লুন্ঠন, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো কাজ করতে প্রশিক্ষিণ দেওয়া হয়েছিল।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্দেশে সেই সকল লোকেরাই কাশ্মীরের নিরস্ত্র জনগণের উপর নৃশংস অত্যাচার শুরু করে। প্রথমে মুজাফফরাবাদে তারা রাষ্ট্রীয় অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেছিল, বাজারে আগুন ধরিয়েছিল এবং লুটপাট চালিয়েছিল। বিবিসির এক প্রতিবেদনে, একজন প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয় যে সেই সময় যেন ধ্বংসযজ্ঞের ছবি এঁকেছিল তারা। রাস্তাঘাট ভাঙা, ভবন এবং আসবাবপত্র, পোড়া জিনিসপত্রের ছাই এবং মৃতদেহ দিয়ে ভরে গিয়েছিল। নদীতে শত শত "লাশ ভাসছিল"। হানাদাররা তারপর উরি এবং বারামুল্লায় নেমে যায় যেখানে মৃত্যু এবং ধ্বংসের আরেকটি পর্ব চালানো হয়। বারামুল্লায় এই ঘটনা অনেকেই মনে রেখেছেন।
কাশ্মীরের সেই দিন অর্থাৎ ২২ অক্টোবর কুখ্যাত দিন হিসেবেই কাশ্মীরের মানুষের স্মৃতিতে রয়ে গিয়েছে। তখন থেকে পাকিস্তানি সন্ত্রাসের ছায়ায় বসবাস করছে ভূস্বর্গ, এমনটাই উল্লেখ করা হয় আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে।