পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : এইমসে (AIIMS) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) আজ ফের বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানাকে ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করল সিআইডি। পাঁচিল টপকেও পালাব না, মোবাইলও পুকুরে ফেলব না, ভবানী ভবন থেকে বেরিয়ে মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের। জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। 


রাজ্যজুড়ে শোরগোল ফেলে দেওয়া নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের ৩ বিধায়ক জেলবন্দি ! আরও এক বিধায়কের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ! এই প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যখন দুর্নীতি ইস্যুতে শাসকদলকে ক্রমশ কোণঠাসা করতে চাইছে বিরোধীরা, তখন কল্য়াণী এইমসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানাকে বুধবার ফের জিজ্ঞাসাবাদ করল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা CID।

অনেক কম নম্বর পেয়েও, কল্যাণী এইমসে সুপারিশের ভিত্তিতে বেআইনিভাবে বিধায়ক কন্যা মৈত্রেয়ী দানা চাকরি পান বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার তদন্ত করছে CID। গত বছরের ১১ অক্টোবর এই মামলাতেই বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ককে প্রায় ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন রাজ্য গোয়েন্দারা। আর এদিন তাঁকে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করল CID। এনিয়ে নীলাদ্রিশেখর দানা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আমায় যতবার ডাকবে ততবার আসব।


৫ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২ হাজার জনের পর নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে মৈত্রেয়ীর নাম থাকার পরও, কল্যাণী AIIMS-এ ঠিকাদার সংস্থায় চাকরি পান তিনি। CID সূত্রের দাবি, গত বছরের ১৫ জুলাই, বিধায়ক-কন্যা দাবি করেন, নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও কিছুতে বাবার কোনও ভূমিকা ছিল না। কল্যাণী এইমসেও কোনওদিন যাননি। যদিও গোয়েন্দাদের দাবি, কল্যাণী AIIMS কর্তৃপক্ষ জানায়, বিজেপি বিধায়ক তাঁর মেয়ের চাকরির জন্য হাসপাতালের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেন।

যে বেসরকারি সংস্থা নিয়োগ করেছিল, তারাও জানায়, চাকরির সুপারিশপত্র এসেছিল কল্যাণী AIIMS থেকে। এরপরই গত বছরের অক্টোবরে বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ককে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করে CID। সূত্রের দাবি, এরপর এই মামলায় আরও কিছু তথ্যপ্রমাণ তাঁদের হাতে এসেছে। এছাড়াও নীলাদ্রিশেখর দানার বয়ানেও বেশ কিছু অসঙ্গতি মিলেছে। সেগুলি নিয়ে জানতেই এদিন তাঁকে ভবানী ভবনে তলব করা হয়েছিল।


এনিয়ে নীলাদ্রিশেখর দানা বলেন, আমি পাঁচিল টপকে পালাব না। পুকুরে মোবাইল ফেলে দেব না। তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড আমার জেলায় গিয়ে বলে এসেছিলেন, নীলাদ্রি দানার মেয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছিলেন। আরে প্রমাণ করে দেখান না।

এই মামলায় বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা ছাড়াও, বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও চাকদার বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ-সহ মোট ৮ জনের নামে কল্যাণী থানায় FIR হয়।