বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: দেড় বছর আগের খুনের (murder) অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত (clash) হয়ে উঠল খড়গপুরের (kharagpur) উত্তর জগৎপুর। দুপক্ষ মিলিয়ে জখমের (injured) সংখ্যা ৬। ৫টি বাড়িতে আগুন (burn) লাগিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে রীতিমতো কঠিন পরিস্থিতি।
কী জানা গেল?
পুলিশ জানিয়েছে, বছর দেড়েক আগে ডাইনি অপবাদে ৭১ বছরের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। তারপর থেকেই সপরিবার এলাকা ছাড়া ছিল অভিযুক্তরা। গতকাল তারা গ্রামে ফেরে। অভিযোগ, স্থানীয়রা বাধা দেওয়ায় অভিযুক্তরা তাদের উপর চড়াও হয়। এর পরই বহিরাগতদের নিয়ে অস্ত্র-সহ হামলা চলে বলে অভিযোগ। পরে খড়গপুর লোকাল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনায় এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর গ্রামে ফিরতেই এই ঘটনা। প্রসঙ্গত, ডাইনি অপবাদে হত্যার ঘটনা এই রাজ্যে নতুন নয়। গত বছর এপ্রিলেও একই ধরনের একটি ঘটনার কথা শোনা গিয়েছিল। তবে সে বার ঘটনা ঘটে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে।
ডাইনি অপবাদে মৃত্যু...
গত বছরের ওই ঘটনায় দুই মহিলাকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। কুলচণ্ডা গ্রামের দুই মহিলার ঝাড়ফুঁকের জন্য এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, এই অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। পুলিশ সূত্রে খবর, এরপর এক ওঝা এসে বিধান দেন, ওই দুই মহিলা ডাইনি। পরে এ নিয়ে গ্রামে সভা বসে। সেই সভার পরই দুই মহিলাকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ভাতার থানার পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে। পরে ভাতারের বিডিও এবং থানার ওসি গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে অসুস্থ যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করান। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে পুরুলিয়ার গাড়াফুসরোতে ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে খুনের হুমকির অভিযোগ ওঠে তাঁর প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া মফস্বল থানায় চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এক মহিলা। যুক্তিবাদীরা তখনও বলেছিলেন, সচেতনতামূলক প্রচারেও দূর হচ্ছে না অন্ধকার। বিজ্ঞান এগোচ্ছে, কিন্তু মানুষের মন থেকে এখনও কুসংস্কারের মেঘ কাটেনি। সে কথা ফের প্রমাণ হল খড়্গপুরের ঘটনায়। কবে বদলাবে ছবিটা? ডাইনি অপবাদে কোনও মহিলাকে পিটিয়ে মারার এই প্রবণতা কবে পুরোপুরি থামবে? উত্তর নেই। অন্ধকার বেড়েই চলেছে। তার উপর এই খুনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে আবার সংঘর্ষ।
আরও পড়ুন:মাঝপথে ভেঙে পড়ল বিমান, ভয়াবহ দুর্ঘটনা নেপালে